ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে টেবিল সাজানোর কৌশল



আজকের যুগে টেবিল সাজানো মানেই নতুন নতুন জিনিস কেনার নয় বরং আমাদের আশেপাশের ব্যবহার করা বা ফেলে দেওয়া জিনিসগুলোর সৃজনশীল ব্যবহার এই আসল চ্যালেঞ্জ। ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে টেবিল সাজানোর কেবল অর্থশাস্ত্রই নয় এটি পরিবেশ রক্ষায় ও বিশেষ ভূমিকা রাখে।

ফেলে-দেওয়া-জিনিস-দিয়ে-টেবিল-সাজানোর-কৌশল



সুতরাং, আমরা কিভাবে আমাদের ঘরের অপ্রয়োজনীয় বা পুরনো জিনিসগুলো ব্যবহার করে সুন্দর আকর্ষণীয় এবং ইউনিক টেবিল সাজাতে পারি তারই কিছু চমৎকার কৌশল এখানে আলোচনা করা হয়েছে। সুন্দর দেখাবে না বরং তোমার সৃজনশীলতা ও পরিবেশ সচেতনতার পরিচয় বহন করবে।


পোস্ট সূচিপত্রঃ ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে টেবিল সাজানোর কৌশল

ফেলে দেওয়া জিনিসের মধ্যে কোনগুলো টেবিল সাজানোর জন্য আদর্শ?

আমাদের ঘরবাড়িতে অনেক সময় এমন জিনিস পড়ে থাকে যেগুলো ব্যবহার করা হয় না বা ফেলে দেওয়ার কথা ভাবা যায় ভাবা হয়। কিন্তু সেসব জিনিসের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে অসাধারণ সম্ভাবনা বিশেষ করে টেবিল সাজানোর জন্য। যদি আমরা একটু কল্পনা শক্তি ব্যবহার করি এবং সেগুলোকে সঠিকভাবে সাজাই তাহলে খুব কম খরচে নিজের টেবিলকে একদম নতুন রূপে সাজানো সম্ভব। নিচে এমন কিছু ফেলে দেওয়া জিনিসের তালিকা দেওয়া হলো যেগুলো টেবিল সাজানোর জন্য আদর্শ এবং সহজেই পাওয়া যায়।

১/পুরনো কাঠের বোতল ও জার

কাচের বোতল বা ছোট বড় যার সাধারণত বাড়িতে ফেলে দেওয়া হয়। এগুলোকে ফুলদানি হিসেবে ব্যবহার করা যায় যেখানে তুমি ছোট ছোট ফুল বা ড্রাই ফলোয়ার সাজাতে পারো। এছাড়া বোতলগুলোকে রং করে বা স্ট্রিং লাইট বসিয়ে খুব সুন্দর টেবিলে ল্যাম্পের মত সাজানো যায়।

২/পুরনো কাঠের পিস বা টুকরা

বাড়িতে পুরনো কাঠের টুকরা বা ফেলে দেওয়া কাঠের ফ্রেম থাকলে সেগুলো টেবিল ম্যাট বা ছোট ট্রে হিসাবে ব্যবহার করা যায়। কাঠকে পেইন্ট করে বা ভুট্টা দিয়ে ভালোভাবে পালিশ করলে একদম ইউনিক এবং সুন্দর লুক পাওয়া যায়।

৩/পেপার রোল ও কার্ডবোর্ড

পেপার রোল ( টয়লেট পেপার, টিস্যু রোল) বা ছোট কার্ডবোর্ড টুকরা রিসাইক্লিং করে টেবিলের জন্য প্লেন হোল্ডার বা ছোট কনটেইনার বানানো যায়। সেগুলোকে রং করে বা কাগজে মোড়ানো হলে দেখতে দারুন লাগে।

৪/পুরনো কাপড় ও ফেব্রিকের টুকরা

ফেলে দেওয়া পুরনো জামা কাপড় কার বা অন্যান্য কাপড়ের টুকরা ব্যবহার করে টেবিল রানার কভারের কাজ করা যায়। কাপড় কে বুনে বা সেলাই করে রঙ্গীন ও নকশাদার ফেব্রিক পিস তৈরি করা যায়।

৫/পুরনো ম্যাগাজিন ও পেপার

ফেলে দেওয়া ম্যাগাজিন পুরনো পত্রিকা থেকে কাটাকাটি করে কাগজের ফুল ট্রে বা প্লেসমেট বানানো যায়। কাগজের শিল্পকর্ম টেবিল সাজানোর জন্য খুবই ক্রিয়েটিভ এবং পরিবেশবান্ধব আইডিয়া।

৬/পুরনো ছোট খেলনা ও পুতুল

বাচ্চাদের খেলে দেওয়া ছোট খেলনা বা পুতুলের অংশ টেবিলের ডেকোরেশন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ছোট খেলনাগুলোকে কোলাজ বা ক্রিয়েটিভ আকারে সাজিয়ে টেবিলের উপর রাখলে দেখতে মজার এবং ইউনিক লাগে।

৭/পুরনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ

ফেলে দেওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়া ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের অংশ যেমন বোর্ড, চিপস, বাটন ইত্যাদি দিয়ে শিল্পকর্ম তৈরি করে টেবিল সাজানো যায়। এটি এক ধরনের আধুনিক শিল্পকর্মের ছোঁয়া দেয়।

৮/পুরনো বইয়ের পাতা

বইয়ের পুরোনো পাতা ব্যবহার করে কাগজের প্লেসমেট বা কন্টেইনার তৈরি করা যায়। বইয়ের পাতায় লেখা ও ছবি থাকায় এটি টেবিলকে এক ধরনের সাহিত্যিক রূপ দেয়।

৯/প্লাস্টিকের পুরনো বোতল ও কনটেইনার

প্লাস্টিক বোতল থেকে ছোট কনটেইনার বা পেন্ট হোল্ডার তৈরি করা যায়। বোতলগুলোকে কাটাকাটি করে রং করলে অনেক সুন্দর দেখায়।

১০/পুরনো কাঠের ট্রে ও বাক্স

ফেলে দেওয়া বা পুরনো কাঠের ট্রে ও ছোট বাক্স টেবিল সাজানোর জন্য অনেক উপযোগী। সেগুলোকে রং করলে বা ডেকো পাস টেকনিকে সাজালে দেখতে খুবই আকর্ষণীয় হয়।

ফেলে দেওয়া জিনিসগুলোকে টেবিল সাজানোর কাজে লাগিয়ে আমরা পরিবেশকে রক্ষা করতে পারি এবং একই সাথে আমাদের ঘর কেউ সুন্দর উনিকো আরামদায় করে তুলতে পারি। তাই আর কখনোই এই ধরনের জিনিস ফেলে দিও না বরং সেগুলোকে নতুন আঙ্গিকে সাজানোর চিন্তা কর। সৃজনশীলতা আর পরিবেশ সচেতনতার সেরা মিল এখানেই।

পুরনো জার ও বোতল দিয়ে বোতল দিয়ে টেবিল ডেকোরেশন আইডিয়া

আজকের দিনে টেবিল সাজানো মানেই ব্যয়বহুল আইটেম কেনা নয় বরং ঘরের পুরনো এবং অপব্যবহিত জিনিসগুলো দিয়ে চিরনশীলতা দেখানো হচ্ছে আধুনিক ডেকরেশনের মূল মন্ত্র। এমন এক চমৎকার উপকরণ হলো পুরনো যার ও কাচের বোতল। এই সহজলভ্য ও পরিবেশ বান্ধব উপাদান গুলো 

ফেলে-দেওয়া-জিনিস-দিয়ে-টেবিল-সাজানোর-কৌশল




দিয়েই তৈরি করা যায় অসাধারণ কিছু টেবিল সাজানোর আইডিয... নিচে কিছু ইউনিকও ব্যবহারিক কৌশল দেওয়া হলো যা ঘরোয়া পরিবেশ সহজেই তৈরি করা যায়।

১/কাঁচের বোতলে ফুলদানি

পুরনো কাঁচের বোতলগুলোকে ভালোভাবে পরিষ্কার করে তার মধ্যে রঙ্গিন ফুল কৃত্রিম বা প্রাকৃতিক ফুল বসিয়ে রাখলে একদমই স্টাইলিশ টাচ পাওয়া যায়। বোতলের গায়ে পেইন্ট করে বা জুট সুতো জড়িয়ে গ্রিনটেজ লোগো দেওয়া যায়।

টিপসঃ

  • বোতলের মুখে ফিতা বা গজ লাগিয়ে সাজাতে পারো।
  • ভেতরে রঙ্গিন পাথর বা কাচের টুকরা রাখলে আরও আকর্ষণীয় দেখাবে।
২/মোমবাতি হোল্ডার হিসেবে ব্যবহার

ছোট ছোট কাঁচের জার বা বোতলের মুখ কেটে নিয়ে তাতে মোমবাতি বসিয়ে দিলে তা হতে পারে রোমান্টিক বা মুড লাইট সেটআপের অংশ। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় টেবিলে এই আলো অনেকটাই উষ্ণ ও শান্ত পরিবেশ তৈরি করে।

টিপসঃ
  • জারে কিছু বালি বা নুড়ি দিয়ে তাতে টিলাইট মোমবাতি রাখো।
  • বাহিরে কাঁচে ডিজাইন করে কিংবা ডেকো পার করে আলাদা look দেওয়া যায়।
৩/বোতলের ফেয়ারি লাইট সেট করা

সাধারণ কাঁচের বোতলের মধ্যে ছোট ফেয়ারির লাইট ঢুকিয়ে দিলে তা হতে পারে একটি আকর্ষণীয় টেবিল ল্যাম্পের বিকল্প।। এটি যেমন পরিবেশ তৈরি করে তেমনি রাতে একদম কজি লুক দেওয়া আলো দেয়।


টিপসঃ
  • রঙ্গিন বোতল ব্যবহার করলে আলো আরো দৃষ্টিনন্দন দেখায়।
  • বোতলের মুখে কর্ক লাগানো এলইডি লাইট ব্যবহার করো যা চার্জেবল হয়।
৪/রঙ্গিন স্যান্ড আর্ট

জারের মধ্যে বিভিন্ন রঙের বালি স্তরে স্তরে দিয়ে রাখলে তা দেখতে হয় চমৎকার। এটি একটি স্থির শিল্পকর্মের মতো দেখতে হয় এবং টেবিলের মাঝখানে রাখলে অন্যরকম এক পরিবেশ তৈরি করে।

টিপসঃ
  • বালি না থাকলে রঙ্গিন কাগজ কুচি দিয়েও এরকম আর্ট করা যায়।
  • সঙ্গে ছোট শাক বা পাথর রাখলে আরো নান্দনিকতা বাড়ে।
৫/বোতল দিয়ে মিনি টেরারিয়াম

ছোট যার বোতলের মধ্যে কিছু মাটি, ছোট গাছ, পাথর এবং মস দিয়ে বানিয়ে ফেলো একটি টেবিলের জন্য মিনি গার্ডেন। এটা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি ঘরে প্রাকৃতিক স্পর্শ এনে দেয়।

টিপসঃ
  • সাধারণ ক্যাকটাস বা বেবি সেকুলেন্ট গাছ লাগাও।
  • পানি দেওয়ার সময় সাবধানে দিও বেশি জল দিলে গাছ পচেও যেতে পারে।
৬/মেসেজ ইন এ বটল

একটি সুন্দর পুরনো বোতলের ভেতরে ছোট ছোট রোল করে কিছু প্রেরণামূলক বার্তা রেখে দিতে পারো। এটি শুধু ডেকোরেশন না বরং মাঝে মাঝে একটি মেসেজ বের করে পড়লে মনও ভালো থাকে।

টিপসঃ
  • কাগজগুলো রঙ্গিন হলে দেখতে আরো আকর্ষণীয় হয়।
  • বোতলের গায়ে ছোট ছোট ট্যাগ লাগিয়ে রাখতে পারো।
৭/কাচের জারে শুকনো ফুল বা হারবস

ফুল শুকিয়ে গেলে সাধারণত আমরা ফেলে দেই। কিন্তু তুমি চাইলে সেই শুকনো ফুল ঝারের মধ্যে রেখে টেবিল সাজাতে পারো। একইভাবে শুকনো দারুচিনি লবঙ্গ বা হালকা সুগন্ধি হার্ব স দিয়ে ডেকোরেশন করা যায়।

টিপসঃ
  • যারে সুতো বা কাঠের বেদ তৈরি করে রাস্টিক ভাব দেওয়া যায়।
  • কিছু অ্যাসেনশিয়াল অয়েল দিলে হালকা ঘ্রাণ ছড়ায়।
পুরনো যার ও বোতল দিয়ে টেবিল সাজানোর কেবল সাশ্রয়ী নয় এটি একটি দারুন পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ। এই ছোট ছোট উপায়ে তুমি তোমার টেবিলকে দিতে পারো একেবারেই ভিন্ন মাত্রা। এইসব আইডিয়া শুধু তোমার বাড়ি কে সাজাবে না বরং তোমার চিন্তা ভাবনার সৃজনশীল দিকটাও প্রকাশ করবে।

প্লাস্টিক ও কাগজের পুরনো জিনিস দিয়ে রঙ্গিন টেবিল ম্যাট বানানো সহজ পদ্ধতি

টেবিল সাজাতে টেবিল ম্যাটের গুরুত্ব অনেক। টেবিল শুধু টেবিলকে সুন্দর করে না বরং রক্ষা করে দাগ গরম পাত্র বা পানির ছপ থেকে। কিন্তু সব সময় নতুন টেবিল ম্যাট কেনার দরকার নেই যদি একটু সৃজনশীল হওয়া যায় তাহলে ঘরের ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ও কাগজের জিনিস তৈরি করা যায় ইউনিক রঙ্গিন পরিবেশবান্ধব ও টেকসই টেবিল ম্যাট। নিচে কিছু সহজ পদ্ধতি ও আইডিয়া তুলে ধরা হলো।

পদ্ধতি ১ ঃ পুরনো ম্যাগাজিন বা পত্রিকা রোল করে ম্যাট তৈরি

যা যা লাগবেঃ
  1. পুরনো রঙিন ম্যাগাজিন বা পত্রিকা।
  2. আঠা বা ব্লু
  3. কাচি।
  4. শক্ত কাগজ বা বোর্ড।
  5. টেপ( চাইলে লেমিনেটেড ফিনিশ দিতে)।
কাজের ধাপঃ
  1. ম্যাগাজিন বা পত্রিকার রঙ্গিন পৃষ্ঠা কেটে লম্বা করে রোল করে নাও।
  2. প্রতিটি রোল আঠা দিয়ে শক্ত করে বানাও।
  3. এবার রোল গুলো একসঙ্গে আঠা দিয়ে গোল বা আয়তাকার করে আকার দাও।
  4. সবগুলো রোল জোড়া দিয়ে ম্যাটের মত চ্যাপ্টা করে দাও।
  5. চাইলে উপরে প্লাস্টিক কাগজ দিয়ে কভার করে দাও যেন টেকসই হয়।
টিপসঃ
  1. বিভিন্ন রঙের পাতা ব্যবহার করলে ম্যাটটি একদম রংধনু লুক পাবে।
  2. রোলের আকৃতি ও দৈর্ঘ্য এক রাখলে দেখতে আরো নিখুঁত হবে।
পদ্ধতি ২ঃ পুরনো প্লাস্টিক ব্যাগ কাটাকাটি করে বোনা ম্যাট

যা যা লাগবেঃ
  1. ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক শপিং ব্যাগ।
  2. কাঁচি।
  3. সেলাই করার সুতা বা প্লাস্টিক দড়ি
  4. বড় সুঁই ।
কাজের ধাপঃ
  1. প্লাস্টিক ব্যাগ গুলোকে সমানভাবে কেটে পাতলা স্ক্রিপ্ট বানাও।
  2. স্ক্রিপ্ট গুলোকে একটার সঙ্গে আরেকটা গিফট দিয়ে বড় সুতার মত বানাও।
  3. এবার সেই স্ক্রিপ্ট দিয়ে বুনন এর মতো করে ম্যাট বানাও চাইলে আয়তাকার বৃত্তাকার বাই স্কয়ার আকৃতি দিতে পারো।
  4. শেষ মাথা গুলো গুছিয়ে পেছন সেলাই বা আঠা দিয়ে আটকে দাও।
টিপসঃ
  1. কালার কম্বিনেশন মিলিয়ে দিলে দেখতে অনেক আকর্ষণীয় লাগবে।
  2. মেশিন বা হোক ব্যবহার করলে আরো নিখুঁত বোনা সম্ভব।
পদ্ধতি ৩ঃ পুরনো ক্যালেন্ডার বা পোস্টার পেপার দিয়ে কোলাজ ম্যাট

যা যা লাগবেঃ
  1. পুরনো ক্যালেন্ডার বা রঙিন পোস্টার।
  2. কাচি।
  3. আঠা।
  4. হ্যান্ডমেড পেপার/কার্ডবোর্ড।
  5. প্লাস্টিক কভার বা ক্লিয়ার ফাইল।
কাজের ধাপঃ
  1. ক্যালেন্ডার বা পোস্টার পেপার থেকে আকর্ষণীয় ছবি ডিজাইন বা রঙ্গিন অংশ গুলো কেটে নাও।
  2. একটি নির্দিষ্ট আকারে  কোলাজ তৈরি করো হ্যান্ডমেড পেপারের উপরে।
  3. আঠা দিয়ে সব অংশ ভালোভাবে আটকে দাও।
  4. শুকানোর পর ক্লিয়ার ফাইল বা প্লাস্টিক দিয়ে কভার করে কাচি দিয়ে মেপে কেটে নাও।
টিপসঃ

  1. চাইলে কোলা যে নিজের নাম বা বার্তা লিখে ইউনিক ম্যাট তৈরি করা যায়।
  2. লেমিনেশন করলে ম্যাট অনেকদিন টিকে।
পদ্ধতি ৪ঃ পুরনো সিডি ডিস্ক ও কাগজ দিয়ে আকারে মোজাইক ম্যাট 

যা যা লাগবেঃ
  1. ফেলে দেওয়া পুরনো সিডি বা ডিভিডি ডিস্ক।
  2. রঙ্গিন কাগজ।
  3. কাঁচি ও আঠা।
  4. শক্ত পিচ বোর্ড বেস।
কাজের ধাপঃ
  1. সিডি গুলোকে কেটে ছোট ছোট টুকরা বানাও ( ধীরে কেটে সাবধান থাকতে হবে)।
  2. রঙ্গিন কাগজ কেটে সেগুলোর সঙ্গে সাজাও মোজাইক স্টাইলে।
  3. শক্ত বোর্ডের উপর সেগুলো একত্রে আঠা দিয়ে বসিয়ে দাও।
  4. পুরোটা শুকিয়ে গেলে রঙ্গিন একটি ম্যাট তৈরি হবে যা টেবিলের আকর্ষণ বাড়াবে।
পদ্ধতি ৫ঃ কাগজের বুনন টেকনিকে ম্যাট তৈরি

যা যা লাগবেঃ
  1. পুরনো কাগজ যেমন ম্যাগাজিন হামের কাগজ গিফট রাপ ইত্যাদি।
  2. স্কেল, পেন্সিল।
  3. আঠা।
  4. কাঁচি।
কাজের ধাপঃ
  1. কাগজ গুলো সমান প্রস্থে কাটো।
  2. একটি কাগজ অনুভূমিক রেখে অন্যটি লম্বালম্বিনের মত বসাও।
  3. শেষ হলে চারদিক গুছিয়ে নাও এবং পেছনে আরেকটি কাগজ আঠা দিয়ে লাগিয়ে দাও। 
  4. চাইলে উপরে প্লাস্টিক কভার দিতে পারো।
এই পদ্ধতি গুলোর প্রতিটি যেমন সাশ্রয়ী তেমনি পরিবেশ বান্ধব। এগুলো তুমি আঁকা বা পরিবার বন্ধুদের সঙ্গে বসে তৈরি করতে পারো এটি এক ধরনের ক্রাফটিং আনন্দ এনে দেয়। আর যখন তুমি তোমার হাতে তৈরি টেবিল ম্যাট টেবিলে ব্যবহার করবে তখন সেটার মধ্যে থাকবে তোমার সৃজনশীলতার ছাপ।


কাঠের পুরনো ফ্রেম বা প্লেট দিয়ে টেবিল কাস্টমাইজেশন

ঘরের কোনায় পড়ে থাকা পুরনো কাঠের ফ্রেম বা ব্যবহার করা প্লেটগুলোকে আমরা প্রায় ফেলে দিয়ে বা অপ্রয়োজনীয় মনে করি। কিন্তু একটু সৃজনশীল চিন্তা আর হাতে কিছুটা সময় থাকলে এসব জিনিস দিয়ে তৈরি করা যায় একেবারে নতুন নান্দনিক ও কাজের আসবাব যেমন একটি কাস্টমাইজ টেবিল। পুরানো কাঠের জিনিসে নতুন রং ডিজাইন আর কিছু কালো শিল্পের ছোঁয়ায় আপনি তৈরি করতে পারেন অনন্য একটি কফি টেবিল পড়ার টেবিল বা ডেকোরেটিভ টেবিল।

প্রয়োজনীয় উপকরণ ও সরঞ্জামঃ
  • কাঠের পুরনো ফটো ফ্রেম/ট্রে/বড় প্লেট।
  • কাঠ বা লোহার চারটি টেবিল পা পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন করা।
  • স্ক্রুও স্ক্রু ড্রাইভার।
  • কাঠের আঠা বা শক্তিশালী আঠা।
  • স্ট্যান্ড পেপার ঘোষে মসৃণ করার জন্য।
  • রং অ্যাক্রেলিক অথবা কাঠের পেইন্ট।
  • ব্রাশ/স্পঞ্জ/পেইন্ট রোলার।
  • পালিশ/ওয়ানিস/টেকসই করার জন্য এগুলো লাগবে।
  • ডেকোরেটিভ উপাদান যেমন ভিকু পাজ পেপার, স্টেন্সিল, স্টিকার, রেজিন ইত্যাদি।
ধাপে ধাপে টেবিল তৈরির পদ্ধতিঃ

ধাপ ১ কাঠের ফ্রেম বা প্লেট বাছাইঃ

পুরনো ফ্রেম বা প্লেটটি ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখুন। কাঠের ফাটল বা পচা থাকলে সেটি বাদ দিন। চাইলে ফ্রেমে একটি কাচ বসিয়ে রাখতেও পারেন টেবিল টপ হিসেবে। 

ধাপ ২ পরিষ্কার ও মসৃণকরণঃ

স্ট্যান্ড পেপার দিয়ে কাঠের সমস্ত অংশ ঘষে নিন যাতে পুরনো রং বা দাগ উঠে যায় এবং নতুন রং ভালোভাবে বসে।

ধাপ ৩ কাঠের গঠন তৈরিঃ

ফ্রেম বা প্লেটটি টেবিল টপ হিসেবে ব্যবহার করে নিচে চারটি পা লাগান। পা গুলো সমানভাবে লাগাতে স্কেল বা পরিমাপক ব্যবহার করুন। স্ক্রু ও ব্লু দুইটা ব্যবহার করলে মজবুত হবে।

ধাপ ৪ রং ডিজাইনঃ

আপনার ইচ্ছেমত রং করুন চাইলে সেবি চিক, মডার্ন , রেট্রো বা মিনিমাম লুক দিতে পারেন। পেইন্টের পর রেজিন বা গ্লসিং ওয়ার্নিংস ব্যবহার করলে ফিনিশিং চমৎকার হবে।

ধাপ ৫ অলংকরণ ও ফিনিশিং টাচঃ

দিকুপাজ বা স্ট্রেন সিল ব্যবহার করে টেবিল টপে ফ্লোরাল ডিজাইন উদ্ভিত্তি বা জ্যামিতিক নকশা বসাতে পারেন। শেষে পলিশ করে নিলে টেকসই হবে এবং কাঠের দীপ্তি বজায় থাকবে।

অতিরিক্ত টিপসঃ
  1. টেবিল টপে কাজ বসালে ওয়াটারপ্রুফ ও স্টাইলিশ দেখায়।
  2. ছোট ফ্রেম হলে সাইট টেবিল হিসেবে ব্যবহার করুন।
  3. পেইন্ট করার আগে প্রাইমার ব্যবহার করলে রং বেশি সময় থাকবে।
  4. কাঠের রং ঠিক রাখতে চাইলে কেবল ওয়ার্নিশ করাই যথেষ্ট।
পুরনো কাঠের ফ্রেম বা প্লেট ফেলে না দিয়ে একটু যত্ন আর সৃজনশীলতা দিয়ে আপনি তৈরি করতে পারেন দৃষ্টিনন্দন একটি টেবিল যা ঘরের শোভা ও বাড়াবে এবং পরিবেশবান্ধব ভাবনা ও জহির করবে। নিজের হাতে তৈরি একটি আসবাব যেমন গর্বের তেমনি এটি হতে পারে আপনার ঘরের হাইলাইট পয়েন্ট। আজ থেকে দেখে নিন ঘরের কোনায় থাকা ফ্রেমগুলো আর তৈরি করে ফেলুন আপনার কাস্টমাইজ টেবিল।

পুতুল ছোট খেলনা বা অন্যান্য ছোট খেলনা দিয়ে টেবিল সাজানোর কৌশল

পুতুল বা ছোট খেলনা মানেই শুধু শিশুদের খেলার উপকরণ নয় এগুলো আমাদের শৈশবের স্মৃতি সৃজনশীলতা আর রঙ্গিন কল্পনার প্রতিক। আপনি যদি একটু ভিন্ন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন টেবিল চান তবে এই ছোট ছোট জিনিস গুলো হতে পারে একেবারেই পারফেক্ট উপকরণ। বিশেষ করে হস্তশিল্প ভালবাসেন যারা তাদের জন্য এটি একটি মজার সাশ্রয়ী ও ইউনিক ডেকোর আইডিয়া।

কি ধরনের খেলনা ব্যবহার করা যায়?
  1. কাঠের বা প্লাস্টিকের পুতুল।
  2. ছোট কার/ট্রেন/বাস সেট।
  3. এনিমেল ফিগার।
  4. কার্টুন/সুপার হিরো ফিগার।
  5. ডিনার সেট/মিনিয়েচার আসবাব।
  6. রাবার খেলনা অথবা রঙ্গিন বল।
  7. লেগু বা ব্লক।
টেবিল সাজানোর কৌশল ও আইডিয়া

১/ থিম অনুযায়ী সাজানো

একটি থিম বেছে নিন যেমন " রেত্র ডল হাউজ" , "সাফারি এনিমেল কর্নার" , "কার্টুন ওয়ার্ল্ড" ," রঙ্গিন শহর" । এরপর সেই থিম অনুযায়ী খেলনাগুলো টেবিলের উপর সাজান। চাইলে কৃত্রিম ঘাস অথবা ছোট স্তন ব্যাকগ্রাউন্ড বোর্ড ব্যবহার করতে পারেন।

২/রে বা ছোট কাঠের বক্সে ডিসপ্লে

একটি চমৎকার কৌশল হলো খেলনাগুলোকে একটি ট্রের মধ্যে গুছিয়ে রাখা। একটি টেবিলে ভিজুয়াল ভারসাম্য আনে এবং পরিষ্কার রাখাও সহজ হয়।

৩/কাচের জার বা ক্লোজ ব্যবহার করুন

বা খেলনা যদি কাঁচের বোতল বাজারে রাখা যায় তাহলে তা হয়ে ওঠে এক ধরনের আর্ট পিচ। ক্লোজ কভার থাকলে আরো ভালো লাগে যেমন একটি মিনিয়েচার প্রদর্শনী হচ্ছে।

৪/গল্প তৈরি করুন খেলনাগুলো দিয়ে

বাচ্চাদের টেবিল বা বসার ঘরের সাইট টেবিলে ছোট খেলনা সাজিয়ে একটি দৃশ্য তৈরি করুন যেমন পুতুল খাচ্ছে খেলছে বা পড়ছে এমনভাবে এতে টেবিল হয়ে ওঠে গল্প ময়।

৫/লাইট বা ফেয়ারি লাইট যোগ করুন

রাতে আলোকিত করার জন্য টেবিলের চারপাশে ফেয়ারি লাইক দিন খেলার চারপাশে আলো পড়লে পুরো সেটআপটি দেখতে আরো সুন্দর দেখাবে।

রং ও ব্যাকগ্রাউন্ড এর টিপসঃ
  1. খেলনা যদি রঙ্গিন হয় তবে টেবিলের পেছনের ব্যাকগ্রাউন্ড রাখুন সাদামাটা।
  2. নির্দিষ্ট রঙ্গের কম্বিনেশন যেমন গোলাপী -সাদা বা নীল -হলুদ ব্যবহার করলে দেখতে আরো প্রফেশনাল লাগে।
  3. পুতুল বা ছোট কার গুলো দাঁড় করাতে চাইলে হালকা আঠা বা ডাবল সাইড টেপ ব্যবহার করতে পারেন।
কেন এই ডেকোরেস্টাইল ট্রাই করবেন?
  • সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব।
  • পুরনো খেলনার পূর্ণ ব্যবহার।
  • শিশুদের জন্য আনন্দদায়ক।
  • ফটোজেনিক ও ইনস্টাগ্রাম যোগ্য সাজ।
  • অতিথিদের জন্য আলোচনার বিষয়বস্তু।
পুতুল ও ছোট খেলনা দিয়ে টেবিল সাজানো একটি সহজ সৃজনশীল ও স্মৃতিময় অভিজ্ঞতা। আপনি চাইলে নিজের তৈরি করা খেলনা ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার টেবিল কে করে তুলবে আরও ইউনিক। নিজের ঘরে একটি ছোট কোন যেখানে গল্প স্মৃতি ও শিল্প একসঙ্গে থাকে এইরকম একটি টেবিল আপনার ঘরের প্রাণ হয়ে উঠতে পারে।

ফেলে দেওয়া কাপড় ও সুতো দিয়ে টেবিল কভার বা রানার তৈরির ট্রিকস

যেসব কাপড় একসময় প্রিয় ছিল তা এখন পড়ে আছে তকিয়ার নিচে বা পুরনো ব্যাগে। আবার সেলাইয়ের পর থেকে যাওয়া সুতো রঙিন ফিতা বা লেইস এসব পড়ে আছে খেয়ালহীন ভাবে। আপনি জানলে অবাক হবেন এই অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো দিয়েই তৈরি করা যায় দারুন নান্দনিক টেবিল কভার বা রানার যা আপনার টেবিলের চেহারা সম্পন্ন পাল্টে দিতে পারে।

প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • ফেলে দেওয়া পুরনো জামা শাড়ি কুর্তি বা পর্দার কাপড়।
  • রঙ্গিন সুতো এমব্রয়ডারি সুতা উল বা লেইস।
  • কাচি সেলাই মেশিন বা হাত সেলাইয়ের সরঞ্জাম।
  • পরিমাপক স্কেল অথবা টেপ।
  • পিন বোর্ড কার্ডবোর্ড প্যাটার্ন তৈরি করতে চাইলে।
  • পছন্দ মতো ডেকোর উপকরণ যেমন বোতাম পোমপোম বা ঝালর ইত্যাদি।
টেবিল কভার বা রানার তৈরির কৌশল

১/কাপড় বাছাই ও কাটা

পুরনো শাড়ি কুর্তি বা জামার এমন অংশ বাঁচুন যেখানে সুন্দর প্রিন্ট বা কারচুপি আছে। যেখানে সুন্দর প্রিন্ট বা কারচুপি আছে সেখানে প্রয়োজনমতো টেবিলের দৈর্ঘ্য মেপে কেটে নিন কভার বা রানারের আকারে।

২/প্যাচওয়ার্ক ডিজাইন

 ভিন্ন ভিন্ন কাপড়ের টুকরো কেটে সেগুলো একসাথে সেলাই করে একটি প্যাচওয়ার্ক রানার তৈরি করতে পারেন এটি দেখতে হবে একেবারে আর্টিস্টিক এবং বহু স্টাইলের।

৩/এমব্রয়ডারি বা সুতা দিয়ে ডিজাইন

আপনি চাইলে রানারের একপাশে হাত সেলাই করে ফুল পাতা বা জ্যামিতিক নকশা দিতে পারেন। এমব্রয়ডারি থার্ড বা রঙ্গিন উলেরকাজ এখানে খুবই কার্যকর।

৪/প্রান্তেলেই বা ঝালর লাগানো

টেবিল কভার বা রানারের চারপাশে ফেলে দেওয়া লেজ পুরনো ওড়নার ঝাড়ুর বা ফিতার কাজ লাগিয়ে দিন। এটি নান্দনিকতা আরও বাড়ায়।

৫/হ্যান্ড পেইন্ট বা ব্লক প্রিন্ট

চাইলে সাদামাটা কাপড়ে হ্যান্ড পেইন্ট বা ব্লক প্রিন্ট করে নিজস্ব ডিজাইয়ানি তৈরি করতে পারেন। এক্ষেত্রে ফেব্রিক পেইন্ট ও   স্টেনসিল ব্যবহার করলে কাজ আরো সহজ হয়।

কিছু বিশেষ টিপসঃ

  • একসাথে কাঁচা যায় এমন কাপড় এই বেছে নিন যেন ধোয়া সহজ হয়।
  • যদি সেলাইয়ের দক্ষতা কম হয় তাহলে কাপড় আঠা ব্যবহার করে বর্ডার বা প্যাচ লাগাতে পারেন।
  • রানার বা কভারটি রিভারসিবল বা দুই পাশে ব্যবহারযোগ্য করে তুললে আরো ব্যবহারিক হবে।
  • মাঝে মাঝে কুশন কভার বা পদ্মার রং এর সঙ্গে মিলিয়ে নিলে ঘরে এক ধরনের থিম তৈরি হয়।
সুন্দর কিছু বানাতে নতুন কিছু কেনার প্রয়োজন নেই সব সময়। পুরনো কাপড় ও সুতোতেই লুকিয়ে আছে আপনার সৃজনশীলতার সম্ভাবনা। শুধু একটু কল্পনার মনোযোগ দিলেই বানানো যায় অসাধারণ এক টেবিল রানার বা কভার যা আপনার ঘরের এক ফোনে এনে দেবে এক টুকরো শিল্প পরিবেশবান্ধব ভাবনা আর নিজস্ব স্টাইলের সংমিশ্রণ এটাই সত্যি কারের ক্রাফট হোম।

তুমি কি কি কাপড় জমিয়ে রেখেছো? আজই বের করে নাও সেগুলো আর তৈরি করে ফেলো তোমার নিজস্ব ডিজাইন করা টেবিল কভার।


কাগজ ও ম্যাগাজিন রিসাইক্লিং করে ক্রিয়েটিভ টেবিল কন্টেইনার বানানো

আপনার বাসায় পুরনো ম্যাগাজিন কাগজ কিংবা রঙ্গিন প্যাকেট গুলো পড়ে থাকে ধুলো জমে। সেগুলো জায়গা হয় রিসাইকেলিং বক্সে বা ডাস্টবিনে। অথচ একটু সৃজনশীল চিন্তা আর হাতের কাজ জানলে এই অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো দিয়ে তৈরি করা যায় দারুন এক টেবিল কন্টেইনার। এটা শুধু ডেকোরেটিভ হই নয় পাশাপাশি কার্যকরীও যেমন কলম, ব্রা্‌শ, কাচি , দ্রুত বা ফুল রাখার উপযুক্ত একটি কন্টেইনার হয়ে উঠতে পারে।

প্রয়োজনীয় উপকরণঃ

  1. পুরনো ম্যাগাজিন রঙ্গিন পেপার বা নিউজ পেপার।
  2. আঠা (পেস্ট/মড পজ) , ব্রাশ।
  3. কাচি।
  4. খালি বোতল, যে কোন জুসের বোতলের ক্যান, কাগজের রোল, ছোট বক্স (বেজ হিসাবে)।
  5. এক্রেলিক রং, গ্লিটার, ওয়াসি টেপ।
  6. ভার্নিশ  বা মড পজ ( ফিনিশিং এর জন্য)।
ধাপে ধাপে তৈরি করার কৌশলঃ

১/বেস্ট কন্টেইনার তৈরি/নেওয়া

কোন খালি বোতল, জুসের বোতলের ক্যান, ছোট প্যাকেট বা ঘন কাগজের রোল বেছে নিন। এটি হবে আপনার কন্টেইনার এর মূল স্ট্রাকচার। চাইলে কার্ডবোর্ড দিয়েও নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন কাঠামো।

২/ম্যাগাজিন বা কাগজ কাটা

পুরনো ম্যাগাজিন বা কাগজ থেকে সুন্দর রঙিন পৃষ্ঠাগুলো বেছে নিন। ছোট ছোট স্ক্রিপ্ট বা আকার মতো কেটে নেন চৌকো, ত্রিভু্‌জ, ফ্লাওয়ার বা জ্যামিতিক ডিজাইনে।

৩/পেস্টিং বা ডেকু পাজ

আঠা ব্রাশ দিয়ে কনটেইনারের গায়ে ম্যাগাজিন কাগজ লাগাতে শুরু করুন। রাখলে একটা টেক্সচার তৈরি হবে। পুরো কন্টেইনার কভার হয়ে গেলে এক থেকে দুই ঘন্টা শুকাতে দিন।

৪/কাস্টমাইজ করুন রঙ ও ডিজাইনে

ম্যাগাজিন টেস্টিং শেষে চাইলে উপর থেকে হালকা একুরিয়াম রং এর টাচ দিন অথবা কিছু অংশে গ্লিটার যোগ করতে পারেন। ওয়াসি টেপ বা পুতি দিয়ে বর্ডার করলে দেখতে হবে আরো দৃষ্টিনন্দন।

৫/ফিনিশিং ও টাচ

সব শুকিয়ে গেলে উপর থেকে ভারনিশ বা মড পজ দিন । এটি কন্টেইনার কে জলরথী এবং দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে।

ব্যবহার ও উপযোগিতাঃ

  1. টেবিলে কলম, পেন্সি্‌ল, কাজি রাখার জন্য।
  2. মেকআপ ব্রাশ বা কসমেটিক হোল্ডার হিসেবে।
  3. ফুলদানি হিসেবে।
  4. ছোট গিফট কন্টেইনার তৈরি হিসেবে।
  5. রিডিং টেবিলে স্টেশনারি অর্গানাইজ করতে।
কেন এই কৌশল ব্যবহার করবেন?
  1. সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব ও রিসাইকেল ফ্রেন্ডলি।
  2. খরচ ছাড়া সৃজনশীল কিছু তৈরি।
  3. ঘরের টেবিলের জন্য ইউনিক অর্গানাইজার।
  4. বাচ্চাদের শিক্ষামূলক ক্র্যাফট প্রজেক্ট হিসেবে উপযোগী।
  5. সহজেই ইনস্টাগ্রামে বা ব্লগে শেয়ার করার মতো কন্টেন্ট।
সৌন্দর্য আর কার্যকারিতা যখন একসঙ্গে মিলে তখন সেটি হয়ে ওঠে টেকসই শিল্প। ম্যাগাজিন ও পুরনো কাগজ ব্যবহার করে তৈরি করা হয় টেবিল কন্টেইনার শুধু আপনার ঘর সাজাবে না আপনার সৃজনশীলতা কেউ তুলে ধরবে দারুন ভাবে। এমন কাজ শুধু সময় কাটানোর উপায় নাই বরং নিজের কাজের গর্ব করার মতো কিছু।

ফেলে দেওয়া ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ দিয়ে আধুনিক শিল্পকর্মের ছোঁয়ার টেবিল সাজাতে


পুরনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ যেমন—মাদারবোর্ড, তার, রেজিস্টর, বোতাম, হার্ডডিস্ক, কি-বোর্ড বাটন—এসব অনেকেই ফেলেই দেন। অথচ এই জিনিসগুলোকে একটু সৃজনশীলভাবে ব্যবহার করলে তৈরি করা যায় চমৎকার শিল্পকর্ম, যা টেবিল সাজানোর ক্ষেত্রে এনে দিতে পারে একদম ভিন্নধর্মী, আধুনিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল লুক।এটা শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, বরং একটা নতুন ডিজাইন ভাবনার দৃষ্টান্তও।


প্রয়োজনীয় উপকরণঃ

  • পুরনো কম্পিউটার, মোবাইল, রিমোট বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ
  • আঠা (হট গ্লু বা সুপার গ্লু)
  • কাঠ বা কার্ডবোর্ড বেস
  • স্প্রে পেইন্ট (সিলভার, ব্ল্যাক, ব্রোঞ্জ ইত্যাদি)
  • ছোট LED লাইট (চাইলে)
  • ল্যাকার বা ক্লিয়ার ভার্নিশ
  • পুরনো ঘড়ির যন্ত্রাংশ, তার, বোতাম, চিপ ইত্যাদি

তৈরির কৌশলঃ

১. যন্ত্রাংশ নির্বাচন ও পরিষ্কার

পুরনো রিমোট, হার্ডডিস্ক, মাদারবোর্ড, পোর্টস ইত্যাদি খুলে ফেলুন। ভেতরের যন্ত্রাংশগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুলাবালি মুক্ত করে নিন।

২. আর্ট প্যানেল বা কনটেইনার বেছে নিন

আপনি চাইলে কাঠের ফ্রেম, MDF বোর্ড বা কাচের কন্টেইনার বেছে নিতে পারেন যেটার ওপর যন্ত্রাংশগুলো লাগানো হবে।

৩. ডিজাইন প্ল্যান করুন

যন্ত্রাংশগুলো দিয়ে একটি গঠনমূলক নকশা তৈরি করুন—চক্রাকারে, লাইন ধরে, বা জ্যামিতিক ফর্মে। চাইলে ঘড়ির গিয়ার বা কিপ্যাড দিয়ে আকর্ষণীয় ফোকাল পয়েন্ট তৈরি করুন।

৪. গ্লু দিয়ে বসানো

হট গ্লু বা সুপার গ্লু দিয়ে যন্ত্রাংশগুলো বোর্ড বা কন্টেইনারে ভালোভাবে বসান। পার্টসগুলো বিভিন্ন উচ্চতায় লাগালে 3D ইফেক্ট আসবে।

৫. রঙ ও আলো যোগ করুন

শেষে চাইলে স্প্রে পেইন্ট দিয়ে কালার টোন (মেটালিক ব্ল্যাক, সিলভার, গোল্ডেন) যোগ করুন। LED লাইট যোগ করলে টেবিলে রাতেও একটা মোডার্ন ও টেক-ই লুক আসবে।

৬. ফিনিশিং

সব শুকিয়ে গেলে ওপরে ক্লিয়ার ভার্নিশ দিয়ে দিন, যাতে এটি টেকসই হয় এবং চকচকে লুক ধরে রাখে।


ব্যবহার ও সাজানোর টিপসঃ

  • ঘরের স্টাডি টেবিলে বা ওয়ার্ক ডেস্কে রাখলে চমৎকার টেকনো আর্ট ফিল আসে
  • ছোট বাটিতে যন্ত্রাংশ দিয়ে বানানো ফুল বা পেনহোল্ডার রাখলে টেবিল হয় ইউনিক
  • কার্ডবোর্ড দিয়ে বানানো ফটোফ্রেমে যন্ত্রাংশ দিয়ে বর্ডার করলে আরও আকর্ষণীয় লাগে
  • পুরনো RAM বা হার্ডডিস্কের ওপর নামের ট্যাগ বা মেসেজ লেখা যায়—ডেস্কে রাখার জন্য

কেন এই শিল্পকর্ম গুরুত্বপূর্ণ?

  • ইকো-ফ্রেন্ডলি: ই-ওয়েস্ট কমানো
  • আধুনিক নকশা: ইন্ডাস্ট্রিয়াল বা স্টিমপাঙ্ক লুক
  • কম খরচে ইউনিক ডেকোর
  • শিক্ষামূলক: বাচ্চাদের ওয়ার্কশপ বা স্কুল প্রজেক্টের জন্য উপযুক্ত

আধুনিক ঘরের সাজে প্রযুক্তির ছোঁয়া যদি থাকে শিল্পকর্মের মতো, তবে সেটি শুধু আকর্ষণীয় নয়, চিন্তার খোরাকও জোগায়। পুরনো যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি টেবিল ডেকোর আইটেম শুধু ঘরের সৌন্দর্যই নয়, একধরনের বার্তাও দেয়—'ফেলে না দিয়ে রূপ দাও'। এটা সেই শিল্প, যা প্রযুক্তিকে ভালোবাসে, প্রকৃতিকেও সম্মান করে।

পুরনো বইয়ের পাতা ব্যবহার করে ইউনিক টেবিল প্লেসমেন্ট বা ডেকোরেশন তৈরি

পুরনো বইয়ের পাতায় লুকিয়ে থাকে শুধুই গল্প নয়—থাকে শিল্পের সম্ভাবনাও। পড়ে ফেলা কিংবা ছিঁড়ে যাওয়া বইয়ের পাতাগুলোকে নতুন করে ব্যবহার করে বানানো যায় ইউনিক টেবিল প্লেসমেন্ট ও ডেকোরেশন আইটেম। এই রকম একটি ডেকোর চিন্তা শুধু পরিবেশবান্ধবই নয়, বরং ঘরে এনে দেয় সাহিত্যঘেঁষা এক শিল্পিত আমেজ।

যা যা লাগবে:

  • পুরনো বইয়ের পাতা (সাহিত্য, উপন্যাস, কবিতা—যেটা পছন্দ)
  • মোটা কাগজ বা কার্ডবোর্ড (বেস হিসেবে)
  • আঠা (মড পজ বা হট গ্লু)
  • ট্রান্সপারেন্ট কভারিং শিট (চাইলে)
  • জলরং বা হ্যান্ডলেটারিং পেন (ডেকোরের জন্য)
  • কাঁচি, স্কেল, পেইন্টব্রাশ

তৈরির ধাপ:
১. সাইজ ঠিক করো:
প্রথমে ঠিক করে নাও টেবিল প্লেসম্যাটটি কত বড় হবে। সাধারণত ১২×১৮ ইঞ্চির মতো রাখলে ভালো দেখায়।

২. পাতাগুলো সাজাও:
পুরনো বইয়ের পাতাগুলো সুন্দরভাবে একটির পর একটি সাজিয়ে নাও। একে অপরের ওপরে কিছুটা ওভারল্যাপ করলে কোলাজ ইফেক্ট আসে।

৩. আঠা দিয়ে পেস্ট করো:
কার্ডবোর্ড বা বেসে পাতাগুলো আঠা দিয়ে ভালোভাবে লাগিয়ে ফেলো। চাইলে ওপরে একবার পাতলা করে মড পজ ব্রাশ করে নাও।

৪. আর্ট স্পর্শ দাও:
পাতার ওপর তুমি চাইলে হালকা রঙ তুলতে পারো, অথবা হ্যান্ড-লেটারিং করে ছোট কোটেশন বা কবিতার লাইন লিখে দিতে পারো।

৫. কভারিং ও ফিনিশিং:
সব শুকিয়ে গেলে টেকসই করতে পাতার ওপরে ট্রান্সপারেন্ট পিভিসি শিট বা প্লাস্টিক কভার লাগিয়ে নিতে পারো।

ব্যবহার কৌশল ও সাজানোর টিপসঃ

  • কফি টেবিলে কাপ রাখার নিচে
  • মোমবাতি বা ছোট পুতুল বসানোর বেস হিসেবে
  • থিম অনুযায়ী কবিতার পাতায় বানানো প্লেসম্যাট
  • অতিথিদের জন্য বিশেষ বার্তা লেখা নামপ্লেট
  • বই প্রেমীদের টেবিল সাজাতে পারফেক্ট টাচ

কেন এই আইডিয়া স্পেশাল?

  • ইকো-ফ্রেন্ডলি ও বাজেট-বান্ধব
  • সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ
  • প্রত্যেকটি টুকরো থাকে ইউনিক
  • উৎসব, ফটোশুট বা হস্তশিল্প প্রদর্শনীতে দারুণ উপযোগী


একটা পুরনো বই শুধু পড়ে শেষ হয়ে যায় না—তার পাতাগুলো দিয়েও শুরু হতে পারে এক নতুন শৈল্পিক গল্প। টেবিলের ছোট এক কোণে যদি থাকে সাহিত্যনির্ভর সাজ, তবে সেটাই হয়ে উঠতে পারে ঘরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান।

রং ও পেইন্টের সাহায্যে ফেলে দেওয়া জিনিসের নতুন জীবন টেবিল সাজানোর সহজ টিপস

রং ও পেন্টের সাহায্যে ফেলে দেওয়া জিনিসের নতুন জীবন টেবিল সাজানোর সহজ উপায়
ঘরের কোণায় পড়ে থাকা পুরনো বোতল, ক্যান, কাঠের টুকরো কিংবা ফেলে দেওয়া কাঁচের পাত্র—এইসব জিনিস কি কেবল আবর্জনা? মোটেও না! একটু রং, একটু কল্পনা আর একটু সময় থাকলেই এসব জিনিস হতে পারে তোমার টেবিলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ডেকোর আইটেম। রিসাইক্লিং আর DIY প্রেমীদের জন্য এটি একদম সহজ, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব উপায়।


যা যা লাগবেঃ

  • ফেলে দেওয়া কাচের বোতল, কৌটা, কাঠ বা মাটির জিনিস
  • অ্যাক্রেলিক বা স্প্রে পেইন্ট (তোমার পছন্দের রঙে)
  • ব্রাশ, স্পঞ্জ বা পেইন্ট রোলার
  • মাস্কিং টেপ (ডিজাইন করার জন্য)
  • চকলেট টিন, মোমবাতি কন্টেইনার, ছোট কাঁচের জার
  • ফ্লাওয়ার বা শুকনো পাতা, স্টোন, গ্লিটার (সাজানোর জন্য)

কাজের ধাপ ধাপে বিশ্লেষণঃ

১. পাত্র পরিষ্কার করো
যেকোনো ফেলে দেওয়া বোতল, ক্যান বা পাত্র আগে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নাও। পুরনো লেবেল বা গন্ধ থাকলে সেটা তুলে ফেলো।

২. রঙ বেছে নাও
তোমার ঘরের থিম অনুযায়ী রঙ নির্বাচন করো—প্যাস্টেল, গোল্ডেন, মেটালিক, সাদা–কালো, রঙিন ফ্লোরাল ইত্যাদি।

৩. পেইন্টিং শুরু করো
স্প্রে পেইন্ট ব্যবহার করলে দ্রুত ও স্মুথ লুক আসে। চাইলে ব্রাশ বা স্পঞ্জ দিয়েও রঙ করতে পারো। মাস্কিং টেপ ব্যবহার করে জ্যামিতিক বা স্ট্রাইপ ডিজাইন তৈরি করো।

৪. সাজাও নিজস্ব স্টাইলে
রঙ শুকিয়ে গেলে চাইলে গ্লিটার, রিবন, শুকনো ফুল, বোতামের ডিজাইন বা হ্যান্ড-লেটারিং যোগ করে কাস্টমাইজ করো।

৫. টেবিলে প্লেস করো
এখন তৈরি করা আইটেমগুলো টেবিলের সেন্টারপিস, সাইড কার্নার, বা বইয়ের পাশে সাজিয়ে রাখো। চাইলে মোমবাতি বা শুকনো ফুল দিয়ে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারো।

কোন জিনিসগুলো কাজে লাগানো যায়?

  • পুরনো গ্লাস জার
  • কনডেন্সড মিল্ক বা কফির টিন
  • ডেটল বোতল, অ্যালকোহল কন্টেইনার
  • কাঠের বক্স, পুরনো ফ্রেম
  • প্লাস্টিক ফেলে দেওয়া বালতি বা মগ

এই উপায়ে লাভ কী?

  • পরিবেশবান্ধব – রিসাইক্লিং ও ওয়েস্ট মিনিমাইজেশনে সহায়ক
  • বাজেট ফ্রেন্ডলি – নতুন কিছু কিনতে হবে না
  • সৃজনশীলতা প্রকাশ – নিজে বানালে নিজস্ব স্বাদ আসে
  • চমৎকার গিফট আইডিয়া হিসেবেও ব্যবহারযোগ্য

ফেলে-দেওয়া-জিনিস-দিয়ে-টেবিল-সাজানোর-কৌশল








রঙ আর একটু কল্পনা থাকলে পুরনো জিনিসের চেহারা একেবারে বদলে যেতে পারে। শুধু টেবিল নয়, ঘরের যেকোনো কোণ—এই DIY আইডিয়াগুলো দিয়ে তুমি করে তুলতে পারো একেবারে নতুন রূপে ঝলমলে। পরবর্তীবার যখন কিছু ফেলতে যাবে, একবার ভেবে দেখো—"এর মধ্যে কি আরেকটা গল্প লুকিয়ে আছে?"



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দিয়া ক্র্যাফট হোম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়। নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url