পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে রুম ডেকোরেশন আইডিয়া

 


সৌখিনতা আর সৃজনশীলতার মিশেলে একটি ঘর সাজানো রুনতম জনপ্রিয় উপায় হল পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে ডেকোরেশন। এই ধরনের সাজসজ্জা শুধুমাত্র চোখের আরাম নয় বরং আপনার নিজস্ব সৃজনশীলতাকে প্রকাশ করার একটি মাধ্যম। আজকাল খুব রঙ্গিন কাগজ,  আঠা ও কাচি দিয়ে তৈরি পরাজয় চমৎকার সব ফুল যা আপনার ঘরের দেয়াল জ্বালানোর পাশে কিংবা শোকেসে  এনে 

পেপার-ফ্লাওয়ার-দিয়ে-রুম-ডেকোরেশন-আইডিয়া



দিতে পারে এক অনন্য সৌন্দর্য। এই ব্লগে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে পেপার ফ্লাওয়ার তৈরি করা যায় কোন কোন ঘর সাজানোর আইডিয়া আপনার ঘরকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলবে এবং কোন কোন জায়গায় এ ফ্লাওয়ার গুলো ব্যবহার করে সবচেয়ে ভালো মানাবে। সহজ উপকরণ ও ধাপে ধাপে গাইডলাইনসহ এই ব্লকটি আপনাকে দেবে পূর্ণাঙ্গ দিক নির্দেশনা যা অনুসরণ করে আপনি নিজেই হয়ে উঠতে পারেন একজন মিনি ঘর সজ্জা শিল্পী।


পোস্ট সূচীপত্রঃ পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে রুম ডেকোরেশন আইডিয়া

  • পেপার ফ্লাওয়ার কি? এবং এটি দিয়ে ঘর সাজানোর বিশেষত্ব
  • সহজে পেপার ফ্লাওয়ার তৈরি করার ধাপগুলো
  • দেয়াল সাজানোর জন্য ক্রিয়েটিভ ডিজাইন আইডিয়া
  • বেডরুমে পেপার ফ্লাওয়ার ব্যবহারের কৌশল
  • পড়ার ঘরে একটি শান্ত ও রঙ্গিন পরিবেশ তৈরি কিভাবে করবেন
  • জন্মদিন ও পার্টি ডেকোরেশন থিম অনুযায়ী পেপার ফ্লাওয়ার ব্যবহার
  • জ্বালানার পাশে পাশে পেপার ফ্লাওয়ার ঝুলানোর পদ্ধতি
  • পুরনো জিনিস দিয়ে নতুন ভাবে পেপার ফ্লাওয়ার ডেকোরেশন
  • ঘর সাজানোর সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী
  • শিশুদের রুম সাজানোর জন্য মজার ও নিরাপদ আইডিয়া

পেপার ফ্লাওয়ার কি? এবং এটি দিয়ে ঘর সাজানোর বিশেষত্ব

পেপার ফ্লাওয়ার অর্থাৎ কাগজের ফুল নামেই বোঝা যায় এটি এক ধরনের কৃত্রিম ফুল যা বিভিন্ন রঙের কাগজ আঠা কাঁচি এবং মাঝে মাঝে একটু অতিরিক্ত শয্যা সামগ্রী ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। এটি কোন রকম প্রকৃত ফুল না হলেও এর রূপ রস এবং বৈচিত্র প্রকৃতি ফুলকেও হার মানাতে পারে। পেপার ফ্লাওয়ার তৈরি একটি চমৎকার হস্তশিল্প যা ঘর সাজানোর জন্য যেমন উপযুক্ত সৃজনশীল এবং মানসিক কাজেও বটে।

কেন পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে ঘর সাজানো বিশেষ?

১/স্বল্প খরচে বড় সৌন্দর্যঃ

পেপার ফ্লাওয়ার তৈরি করতে খুব বেশি খরচ হয় না। আপনি ঘরে পড়ে থাকা কাগজ, ম্যাগাজিন পুরনো রঙিন খাতা বাক্রাফট পেপার ব্যবহার করে অসাধারণ সব ফুল বানাতে পারেন। ফলে অল্প বাজেটেও আপনি ঘরে আনতে পারেন দারুন পরিবর্তন।

২/সৃজনশীলতার প্রকাশঃ

প্রতিটি পেপার ফ্লাওয়ার তৈরি হয় সম্পূর্ণ নিজস্ব ডিজাইনে। আপনি আপনার মনের মত রং, আকার স্টাইল ফুল তৈরি করে ঘরের প্রতিটি গুনে নির্দিষ্ট স্পর্শ যোগ রাখতে পারেন।

৩/টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ীঃ

প্রকৃত ফুল যেমন কয়েকদিন পর শুকিয়ে যায় কাগজের ফুল কিন্তু দীর্ঘদিন একইভাবে রং ও আকার ধরে রাখতে পারে। একটু যত্ন নিলে মাসের পর মাস কিংবা বছরের পর বছর ঘরের সৌন্দর্য রাখতে পারে।

৪/মৌসুমী নির্ভর নয় ঃ

প্রকৃত ফুল পেতে গেলে নির্দিষ্ট মৌসুমের অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু পেপার ফ্লাওয়ার তৈরি করতে কোন মৌসুম লাগে না। আপনি চাইলে শীত, বর্ষা, গ্রীষ্ম, যেকোনো সময় তৈরি করতে পারেন আপনার প্রিয় ফুল।

৫/পরিবেশ বান্ধব বিকল্পঃ

যদি আপনি রিসাইকলোড কাগজ ব্যবহার করেন তাহলে এটি হয়ে উঠে পরিবেশবান্ধব একটি ঘরসজ্জা উপায়। এটি প্লাস্টিক ফুলের মত পরিবেশের জন্য ক্ষতি নয় এবং সহজেই পূর্ণ ব্যবহারযোগ্য।

৬/পার্সোনালাইজড উপহার হিসেবে উপযুক্তঃ

শুধু ঘর সাজানো নয় আপনি চাইলে এই কাগজের ফুল হিসেবে গিফট হিসেবে প্রিয়জনকে দিতে পারেন। এতে আপনার ভালোবাসা ও সময়ের মূল্য থাকবে যা কোন দোকানে কেনা উপহারের চেয়ে অনেক বেশি অর্থবহ।

পেপার ফ্লাওয়ার হল সৃজনশীলতা সৌন্দর্য ও সাধ্যের এক চমৎকার সমন্বয়। এটি শুধু ঘরকে নয় মন কেউ রাঙিয়ে তোলে। সময় করে যদি আপনি নিজ হাতে পেপার ফ্লাওয়ার তৈরি করেন এবং তা দিয়ে সাজান আপনার প্রিয় কক্ষ তাহলে ঘরের প্রতিটি কোন হয়ে উঠবে এক একটি শিল্প কর্ম।


সহজে পেপার ফ্লাওয়ার তৈরি করার ধাপগুলো

একদিকে যেমন মজার তেমনি এটি শিখতে খুব বেশি জটিলও নয়। ঘরে বসেই আপনি কিছু সহজ উপকরণ এবং ধাপে ধাপে নির্দেশনা মেনে খুব সহজেই বানাতে পারেন দারুন সব কাগজের ফুল। নিচে একটি সাধারণ সহজ পদ্ধতি দেওয়া হল যা নবীনদের জন্য একেবারেই উপযুক্ত।

প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • রঙ্গিন কাগজ (ক্রাফট পেপার, গ্লেস পেপার, অরিগামি পেপার)
  • কাচি
  • আঠা
  • পেন্সিল
  • স্কেল
  •  সেলো টেপ (প্রয়োজনে)
  • কাঠি বা স্টিক (ফুলের ডাটা বানানোর জন্য)
ধাপ ১ঃ কাগজ বাছাই ও কাটা
আপনার পছন্দমত রংয়ের কাগজ বেছে নিন। এরপর পেন্সিল স্কেল দিয়ে কাগজকে সমান অংশ কেটে নিন। সাধারণত ফুল বানানোর জন্য ১০ সেন্টিমিটার গুণন ১০ সেন্টিমিটার স্কয়ার পেপার ভালো হ...

ধাপ ২ঃ ভাঁজ করা ও পাপড়ি তৈরি
একটি কাটা কাগজ চার পাঁচবার ভাঁজ করে ফেলুন যেন এটি একটা ফ্যানের মত হয়। একটি ফুলের পাপড়ির মাথা।

ধাপ ৩ঃ খুলে গঠন তৈরি
ফ্যানের মতো ভাঁজ করা কাগজ খুলে একটি গোলাকার গঠন তৈরি করুন। দুটি মাথায় একসঙ্গে আঠা দিয়ে আটকে দিন। আপনি একটি ফুলের মতো দেখতে ডিজাইন পাবেন।

ধাপ ৪ঃ মাঝখানে শোভা করুন
চাইলেই ফুলের মাঝখানে একটি ছোট বোতাম কাগজের বল বা গ্লিটার যোগ করে শোভা বাড়াতে পারেন।

ধাপ ৫ঃ  ডাটা লাগানো
একটি কাঠি বা স্টিক নিয়ে সেটিকে পেছন থেকে দিয়ে আঠা  দিয়ে ফুলে লাগিয়ে নিন। চাইলে সেটিতে সবুজ কাগজ পেঁচিয়ে ডাটা হিসেবে আরো বাস্তব রূপ দিতে পারেন।

ধাপ ৬ঃ সাজানো ও ব্যবহার
আপনার তৈরি ফুলগুলো একটি গ্লাস বা পাত্রে রাখতে পারেন। দেয়ালে লাগাতে পারেন বা মালার মত সাজিয়ে দিতে পারেন।

টিপসঃ
  1. প্রথমবার বানানোর সময় বড় আকারে শুরু করুন। ধীরে ধীরে ছোট ও জটিল ডিজাইন ট্রাই করুন।
  2. একাধিক রং ও প্যাটার্ন ব্যবহার করলে দেখতে আরো আকর্ষণীয় হবে।
  3. ইউটিউব বা প্রিন্টারেস্ট থেকে ভিজুয়াল আইডিয়া নিতে পারেন।
উপরের এই ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি ঘরে বসে খুব সহজেই পেপার ফ্লাওয়ার তৈরি করতে পারবেন।

দেয়াল সাজানোর জন্য ক্রিয়েটিভ ডিজাইন আইডিয়া

দেয়াল হল ঘরের এমন একটি অংশ যা সঠিকভাবে সাজালে পুরো ঘরের পরিবেশ বদলে যেতে পারে। একঘেয়ে ফাঁকা দেয়াল অনেক সময় বিরক্তিকর মনে হতে পারে, কিন্তু কিছু রঙ্গিন পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে সেই দেয়ালকেই আপনি করে তুলতে পারেন দারুন আকর্ষণীয় ও সৃজনশীল। এখানে কিছু চমৎকার ও সহজ ক্রিয়েটিভ আইডিয়া দেওয়া হল যা আপনি ব্যবহার করতে পারেন ঘরের দেয়াল সাজাতে।

১/ফুলের গার্লল্যান্ডঃ

রঙ্গিন কাগজের ছোট ছোট ফুল তৈরি করে সেগুলো সুতা দিয়ে একটি সঙ্গে আরেকটি জুড়ে তৈরি করুন একটি গারল্যান্ড বা মালা। এটি আপনি দেয়ালের উপর থেকে নিচের দিকে ঝুলিয়ে দিতে পারেন কিংবা জানানোর ফ্রেমে লাগাতে পারেন ।এটি ঘরে এনে দেবে একটি উৎসব মুখর পরিবেশ।

২/সেন্টার ফোকাল ডিজাইনঃ

দেয়ালের মাঝখানে একটি বড় গোলাকারবার হৃদয় আকৃতির ডিজাইন তৈরি করুন কাগজের ফুল দিয়ে। চারপাশে ছোট ছোট পাপরি বা পাতার ছোঁয়া যোগ করলে এটি হয়ে উঠবে এটি দৃষ্টিনন্দন ফোকাল পয়েন্ট।

৩/ফ্রেম ফ্লাওয়ার আর্টঃ

এটি সাধারণ ফটো ফ্রেমের কাজ খুলে তার মধ্যে কাগজের ফুল ও পাতা দিয়ে তৈরি করুন একটি ছোট শিল্পকর্ম। এরপর ফ্রেমটি টাঙ্গিয়ে দিন দেয়ালে এটি যেমন ইউনিক দেখাবে তেমনি ঘরের একটি আলাদা রুচিশীলতা প্রকাশ করবে।

৪/ফুলের বৃষ্টিঃ

দেয়ালের উপর থেকে নিচে লম্বা সুতই পেপার ফুল গেথে তৈরি করুন ঝুলন্ত ডিজাইন, যেন মনে হয় ফুল বৃষ্টি হয়ে পড়ছে। এটি দেখতে একদম ড্রিমি এবং instagram বান্ধব শৈলীতে পরিণত হয়।

৫/নাম বা শব্দ তৈরি করুন ফুল দিয়েঃ

আপনার নাম বা একটি ছোট বার্তা যেমনঃ ( "dream", "love", "smile".) কাগজের ফুল দিয়ে বানিয়ে দেয়ালে রাখতে পারেন। এটি একদিকে ব্যক্তিগত স্পর্শ আনবে। আবার অন্যদিকে দেয়ালকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলবে।

৬/থিম অনুযায়ী দেয়াল সাজানোঃ

ঋতু অনুযায়ী থিম সেট করতে পারেন যেমন বসন্তে হলুদ সবুজ ফুল, শীতের সাদা নীল রঙের মিশ্রণ, বর্ষায় জলরঙা ডিজাইন ইত্যাদি। এমনকি আপনার ঘরের রং এর সাথে কালার কম্বিনেশন বেছে নিন।

৭/থ্রিডি পেপার ফ্লাওয়ার ওয়ালঃ

বড় আকৃতির পেপার ফুল তৈরি করে দেয়ালে থ্রি ডাইমেনশনাল বা থ্রিডি এফেক্ট তৈরি করুন। এটি বিশেষ করে বেডরুম বা পড়ার ঘরের এক পাশে লাগালে একদম স্টুডিও লুক তৈরি হবে।

৮/লাইটের সাথে পেপার ফ্লাওয়ার কম্বিনেশনঃ

ছোট ফেয়ারি লাইট বা রাইস লাইট এর সঙ্গে কাগজের ফুল গেঁথে লাগালে রাতের বেলায় এক স্বপ্নীল পরিবেশ তৈরি হবে। এটি বিশেষ করে ফটো ব্যাক ড্রপ বা রোমান্টিক কর্নার তৈরি করতে কাজে আসে।

সাজানোর সময় কিছু বাড়তি টিপসঃ
  • দেয়াল পরিষ্কার করে নিন যাতে আটা বা টেপ ভালোভাবে লেগে থাকে।
  • হালকা ফুলের সঙ্গে মাঝে মাঝে কারো রঙের ফুল ব্যবহার করুন construst বাড়াতে।
  • ছবির ফ্রেম, আয়না, ক্লক এসবের চারপাশে ফুল দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারবেন।
আপনি আপনার ঘরের সাধারণ দেয়ালকে রূপ দিতে পারেন এক নিখুঁত স্বপ্নময় শিল্পকর্মে।

বেডরুমে পেপার ফ্লাওয়ার ব্যবহারের কৌশল

বেডরুম শুধু ঘুমানোর জায়গা নয় এটি আমাদের সবচেয়ে ব্যক্তিগত ও আরামদায়ক স্থান। তাই এই ঘরের সাজসজ্জা হওয়া উচিত এমন যা শান্তি রুচি ও ভালোলাগা প্রকাশ করে। পেপার ফ্লাওয়ার এর মাধ্যমে বেডরুম সাজানো খুব সহজ সাশ্রয় এবং অনেক বেশি কাস্টমাইজেবল। নিচে কিছু দারুন ও কৌশল টিপস দেওয়া হলো যেগুলো আপনি ব্যবহার করতে পারেন আপনার বেডরুমকে সাজাতে।

১/হেডবোর্ড এর উপরে ফুলের ডিজাইন

বিছানার মাথার দিকে দেয়ালটি অর্থাৎ হেডবোর্ড এরিয়া হল চোখে পড়ার মতো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে আপনি পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে একটি আধার শজ্জা তৈরি করতে পারেন। চাইলে নামের অধ্যক্ষর বা হার্ট সেপে ডিজাইন করলেও দারুন দেখাবে।

২/সাইড টেবিল বা আলনার উপর ছোট ফুলের টাচ

বিছানার পাশে থাকা টেবিলে একটি ছোট যার বা বোতলে পেপার ফ্লাওয়ার রাখলে তা দেখতে খুবই স্নিগ্ধ ও আরামদায়ক লাগে। এটি যেমন জায়গা কম নেয় তেমনি সহজে প্রতিদিন নতুন  রূপ দেয়।

৩/জ্বালানোর পাশে ঝুলন্ত ফুলের শোভা

জ্বালানোর পাশে ঝুলিয়ে দেওয়া যায় ছোট ছোট ফুলের মালা। এতে বেডরুমের প্রকৃতিক আলো পড়লে তার মধ্যে ফুলগুলো নরমভাবে আলোয় প্রতিফলিত করে যা ঘরে এনে দেয় এক মিষ্টি আলোর ছায়ার খেলা।

৪/সেলফ বা বুক রেক সাজানো

বইয়ের রে্যাক বা ওয়াল সেলফ এর মাঝে মধ্যে পেপার ফ্লাওয়ার রাখলে তা ঘরে যোগ করে রঙ এবং প্রাণ। চাইলে সেগুলো ছোট পাত্রে রাখতে পারেন বা বইয়ের পাশে হালকা হেলে দিয়ে রাখলেও চমৎকার দেখায়।

৫/মিরর বা ড্রেসিং টেবিল সাজানো

ড্রেসিং টেবিলের আয়নার চারপাশে পেপার ফুল লাগিয়ে দিতে পারেন। এটি দেখতে যেমন চমৎকার তেমনি প্রতিদিনের সজ্জা করার সময় মানসিক প্রশান্তি বাড়ায়।

৬/ফটো ফ্রেমের চারপাশে ফুলের ছোঁয়া

বেডরুমে যদি প্রিয়জনের ছবি বা পারিবারিক মুহূর্তের ফটো ফ্রেম থাকে সেগুলোর চারপাশে পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারবেন। এতে স্মৃতিগুলো আরো উজ্জ্বল ও আবেগময় হয়ে উঠবে।

৭/আলো ও ফুলের সমন্বয়

ফেয়ারি লাইট এর সঙ্গে পেপার ফ্লাওয়ার যুক্ত করে বেডরুমের এক কোনায় একটি রোমান্টিক কর্নার বানানো যায়। এটি রাতের বেলায় ঘরে নিয়ে আসে এক স্নিগ্ধ ও স্বপ্নময় পরিবেশ।

বোনাস টিপসঃ
  • বেডরুমের রং অনুযায়ী ফুলের রং বেছে নিন হালকা রঙের ঘরে প্যাস্টেল শেডের ফুল দারুন মানায়।
  • ফুলের আকার ছোট রাখলে ঘর অনেকে বেশি গোছানো পরিপাটি দেখায়।
  • আঠা ব্যবহার না করে ডাবল সাইট বা হুক ব্যবহার করলে দেয়ালের রং নষ্ট হয় না।
এই সহজ কৌশলগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার বেডরুম কে দিতে পারেন এক শান্ত রুচিশীল এবং সৃজনশীল ঘরে যা শুধু ঘুমের জায়গা নয় বরং হয়ে উঠবে আপনার সবচেয়ে প্রিয় আরামদায়ক কোন।

পড়ার ঘরে একটি শান্ত ও রঙ্গিন পরিবেশ তৈরি কিভাবে করবেন

পড়ার ঘর মানে শুধুমাত্র বই দেক আর চেয়ার এমন ভাবনা এখন পুরনো হয়ে গেছে। একটি সৃজনশীল ও মনোযোগ ধরে রাখার মতো পড়ার পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে ঘর কেউ ঘিরে দিতে হয় এক শান্ত পরিবারটি ও অনুপ্রেরণাদায়ক সাজ। আর এই কাজে পেপার ফ্লাওয়ার হতে পারে চমৎকার ও সাশ্রয়ী একটি উপায়। নিচে দেওয়া হল এমন কিছু সুন্দর আইডিয়া ও কৌশল যার মাধ্যমে আপনি আপনার পড়ার ঘর কে রঙ্গিন প্রেরণামূলক এবং শান্ত একটি পরিবেশে রূপ দিতে পারেন।

১/ডেক্সের দেয়াল সাজে তুলুন ইন স্পেরেশন কর্নারে

পড়ার টেবিলে আপনার সামনে যে দেওয়াল থাকে সেটিকে আপনি পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে সাজিয়ে তুলতে পারেন ইন্সপিটেশনাল ওয়াল হিসেবে। সাথে কিছু মোটিভেশনাল কোটেশন বইয়ের ছবি বা আপনার প্রিয় লেখকের এটি হবে একদম স্টাডি স্পোর্ট।

২/ বুক সেলফ বা স্টোরেস ইউনিটে হালকা ফুলের ছোঁয়া

বইয়ের কাকের পাশে কিংবা উপরে ছোট ছোট কাগজের ফুল রাখলে তা দেখতে যেমন পরিপাটি তেমনি ঘরকে করে তোলে আরও রুচি সম্মত। বেশি না শুধু এক পাশে হালকা রঙের দুটি ফুলও যথেষ্ট।

৩/জালানার পাশে রঙ্গিন ফুলের ঝুলন্ত মালা

পড়ার সময় যেন চোখও মন দুটোই শান্ত থাকে সেজন্য জানালার পাশে ছোট রঙ্গিন ফুল দিয়ে তৈরি মালা ঝুলিয়ে দিন। প্রাকৃতিক আলো এসে যখন ফুলের উপর পড়ে তখন তা মন কে প্রশান্ত করে তোলে।

৪/দেয়ালে প্যাস্টেল রং এর থিম

যেহেতু পড়ার ঘরটি হতে হবে শান্ত তাই খুব বেশি গারো রং না বেছে নিয়ে হালকা গোলাপি, পিচ, নীল বা হালকা সবুজ রঙের কাগজ দিয়ে ফুল বানিয়ে দেয়াল সাজান। এটি চোখকে ক্লান্ত না বরং উৎসাহ জাগাবে।

৫/স্টাডি বোর্ড বা নোটিশ বোর্ডে ফুলের বর্ডার

যদি আপনার পড়ার ঘরে কোন নোটিশ বোর্ড থাকে তার চারপাশে ছোট পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে বর্ডার তৈরি করুন। তাতে নোট বার টেক্সট লিস্ট গুলো আরো আকর্ষণীয় লাগবে এবং আপনার বারবার তাকাতে ইচ্ছা করবে।

৬/টেবিল ল্যাম্পের পাশে কৃত্রিম ফুলের বাস

একটি ছোট গ্লাস বা বাটিতে কিছু প্যাস্টেল সেটের কাগজের ফুল রেখে দিন টেবিল ল্যাম্পের পাশে। রাতে আলো জ্বললে সেটি ঘরে এক নরম সৌন্দর্য তৈরি করবে যা মনকে স্থির ও শান্ত রাখবে।

৭/প্রজেক্ট বা নোট সাজাতে ফুল ব্যবহার

আপনি চাইলে পেপার ফ্লাওয়ার ব্যবহার করতে পারবেন প্রজেক্ট কভার বা ডাইরি সাজাতেও। এতে পড়াশোনার জগতে নিজের মত করে একটি সৃজনশীল ছোঁয়া রাখতে পারবেন।

টিপসঃ
  • বেশি রঙ্গিন না করে থিম অনুযায়ী দুই থেকে তিন রঙ্গে ফুল তৈরি করুন।
  • জিনিসপত্র এলোমেলো না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
  • ফুল বেশি ঝুলিয়ে রাখলে তা পড়ার সময় বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে ব্যালেন্স বজায় রাখুন।
এভাবেই আপনি আপনার পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে আপনার ঘ পড়ার ঘরকে করে তুলতে পারেন অনুপ্রেরণামূলক রুচি সম্মত ও শান্তিপূর্ণ যেখানে পড়তে মন চাইবে বারবার।

জন্মদিন ও পার্টি ডেকোরেশন থিম অনুযায়ী পেপার ফ্লাওয়ার ব্যবহার

পারিবারিক জমায়েত, জন্মদিন, পূজার আয়োজনে কিংবা বাড়িতে হঠাৎ কোন ছোটখাটো অনুষ্ঠান এসব বিশেষ দিনগুলোকে ঘরকে সাজিয়ে তোলার ইচ্ছে আমাদের সবারই থাকে। আর পেপার ফ্লাওয়ার ব্যবহার করে আপনি সহজেই এই সাজে আনতে পারেন রং আনন্দ আর উৎসবের আমেজ। কেবল কয়টি রঙ্গিন কাগজ কাঁচি আর সামান্য সময় দিয়েই আপনি তৈরি করতে পারেন একদম আলাদা একটি পার্টি এনভারমেন্ট। নিচে দেওয়া হলো কিছু সহ সৃজনশীল এবং স্টাইলিশ ডেকোরেশন আইডিয়া যেগুলো আপনি পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে করতে পারেন যেকোনো অনুষ্ঠানে।

১/ওয়েলকাম কর্নার সাজান ফুল দিয়ে

ঘরের প্রবেশপথে একটি ছোট ওয়েলকাম বোর্ড রেখে তার চারপাশে বড় বড় পেপার ফুল লাগিয়ে দিন। এর মাধ্যমে অতিথিদের প্রথম নজরেই পড়বে আপনার রুচিও আয়োজনের সৌন্দর্য।

২/ফটোব্যাক ড্রপ তৈরি করুন ফুল দিয়ে

পার্টির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হল ছবি তোলার ব্যাকগ্রাউন্ড। এখানে বড় বড় রঙ্গিন পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে একটি ব্যাক ড্রপ তৈরি করুন। চাইলে সাথে ফেয়ারি লাইট ও ছোট কার্ডবোর্ড লেটার যোগ করে লিখতে পারেন ইভেন্টের নাম। যেমনঃ হ্যাপি বার্থডে, ঈদ মোবারক ইত্যাদি।

৩/ডাইনিং এরিয়ার টেবিল সেন্টার স্পিচ

ডাইনিং টেবিল বা খাবার রাখার জায়গায় একটি ভাসে কৃত্রিম কাগজের ফুল রেখে দিন। ফুলের রং মিলিয়ে প্লেট ্ম্যাট সাজালে পুরো টেবিল দেখাবে খুব গোছালো উৎসবমুখর।

৪/বেলুন ও পেপার ফ্লাওয়ার এর কম্বো

রঙ্গিন বেলুনের সাথে কাগজের ফুল জুড়ে দিলে আপনি একটি পার্টি মুড তৈরি করতে পারবেন খুব অল্প সময়ে। এই কম্বিনেশনটি শিশুদের জন্মদিন নিয়ে বিশেষভাবে দারুন লাগে।

পেপার-ফ্লাওয়ার-দিয়ে-রুম-ডেকোরেশন-আইডিয়া








৫/ক্যান্ডি কর্নার বা গিফট টেবিল সাজানো

যদি অনুষ্ঠানের ক্যান্ডি বা গিফট টেবিল থাকে সেখানে ফুল দিয়ে একপাশে বর্ডার বানিয়ে দিতে পারেন। শিশু থেকে বড় সবাইকে আনন্দ দেবে।

৬/থিম অনুযায়ী ফুলের রং নির্বাচন

ইভেন্ট অনুযায়ী থিম সেট করে তার সঙ্গে মিলিয়ে ফুলের রং বেছে নিন। যেমনঃ
  • জন্মদিনঃ রঙ্গীন ও উজ্জ্বল রং।
  • পূজা বা ঈদঃ সোনালী, , লাল, সাদা।
  • বেবি শাওয়ারঃ প্যাস্টেল ব্লু বা পিং
৭/চেয়ারে ফুল লাগিয়ে দিন

চেয়ারের পেছনে একটি ছোট পেপার ফুল বেঁধে দিলেও সেটিও দেখায় অনেক স্পেশাল ও সাজানো। একটি বিশেষ করে ব্রাইডাল শাওয়ার বা গার্লস গেদারিংয়ে  দারুন লাগে।

৮/ গিফট র‍্যাপিংয়ে ফুলের ছোঁয়া

আপনার দেয়া উপহারটিকে লাদা করে তুলতে কাগজের ফুল ব্যবহার করতে পারেন গিফট র‍্যাপিংয়ে। এটি দেখলে সবাই বলবেই কত সুন্দর ভাবে উপহারটি সাজানো হয়েছে।

পরামর্শঃ
  • অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার অন্তত একদিন আগে সব ফুল তৈরি করে রাখলে চাপ কমে যাবে।
  • পেপার ফ্লাওয়ার গুলো সহজে সরানো ও পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে সাজান।( ডাবল সাইড টেপ বা হোক ব্যবহার করুন)।
  • যদি সম্ভব হয় কিছু ফুলের মাঝে সুগন্ধি স্প্রে করুন দর্শন ও ঘ্রাণ দুটোতেই পরিবেশ মুগ্ধ হবে।
এভাবেই আপনি যেকোনো ছোট বড় অনুষ্ঠানে পেপার ফ্লাওয়ার দিয়ে নিজের ঘরকে রূপ দিতে পারেন এক উৎসবমুখর আনন্দঘন আবহে অতিথিদের মনে থেকে যাবে দীর্ঘদিন। 

জ্বালানোর পাশে পাশে পেপার ফ্লাওয়ার ঝুলানোর পদ্ধতি

জালানার পাশে পেপার ফ্লাওয়ার জুড়ে দিলে ঘরটা হয়ে ওঠে অনেক রঙ্গিন ও প্রাণবন্ত। বিশেষ করে সকালে রোদের আলো পড়লে ফুলগুলো আরো সুন্দরভাবে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। নিচে দেওয়া হল ধাপে ধাপে এই কাজ করার পদ্ধতি।

যা যা লাগবেঃ
  • তৈরি করা পেপার ফ্লাওয়ার( বিভিন্ন আকারো রঙে)।
  • পাতলা সুতা বা লাইলনের জরি ( ট্রান্সপারেন্ট হলে ভালো)।
  • ডাবল সাইড টেপ/আঠা /ছোট পিন।
  • কাগজের পাতা পাতা ডিজাইন দিলে আরো ভালো দেখায়।
  • ছোট হোক বা কস্টেপ জ্বালানোর কাঠ বা ফ্রেমে আটকানোর জন্য।
ধাপ ১ঃ ফুলগুলো তৈরি করে রাখুন

রঙ্গিন কাগজ দিয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের কিছু পেপার ফ্লাওয়ার তৈরি করে নিন। চাইলে পাতাও বানিয়ে নিতে পারেন।

ধাপ ২ঃ সুতা কেটে মালার মত বানান

প্রতি লাইনের জন্য দুই থেকে তিন ফুট লম্বা সুতা কেটে নিন। এরপর প্রতি পাঁচ থেকে ছয় ইঞ্চি পর পর ফুল আঠা দিয়ে সুতার সাথে লাগিয়ে দিন।

ধাপ ৩ঃ জ্বালানোর উপরের ফ্রেমে হুক বা টেপ দিন

জ্বালানোর উপরে বা দুইপাশে ছোট বুক লাগান অথবা টেপ দিয়ে জায়গা তৈরি করুন যেখানে ফুলের সুতা ঝুলিয়ে রাখা যাবে।

ধাপ ৪ঃ ফুলের মালা ঝুলিয়ে দিন

প্রস্তুত করা ফুলের মালা বা গার্লল্যান্ড হোক বা টেপে লাগিয়ে দিন। চাইলে একসাথে তিন থেকে চারটা মালা একসঙ্গে সাজাতে পারেন একটু ঢেউয়ের মতো করে এতে আরো দারুন লোক আসবে।

অতিরিক্ত আইডিয়াঃ
  • মাঝেমধ্যে ফেয়ারি লাইট বা ছোট এলইডি লাইট দিয়ে ফুলের মধ্যে ঘুরিয়ে দিন রাতে অসাধারণ দেখাবে।
  • যদি শিশুর ঘরের জন্য করেন তাহলে কার্টুন ক্যারেক্টার বা বেলুনের কাগজ কেটে তার সাথে ফুল মিলিয়ে দিতে পারেণ।

পুরনো জিনিস দিয়ে নতুনভাবে পেপার ফ্লাওয়ার ডেকোরেশন

ঘর সাজানোর জন্য নতুন কিছু কিনতেই হবে এই ধারণা আজকাল বদলাতে শুরু করেছে। এখন সৃজনশীলতা ও পরিবেশ সচেতনতাই হচ্ছে ঘর সাজানোর নতুন ধারা। পুরনো ও অপব্যবহিত জিনিসপত্র দিয়ে তৈরি করা হয় পেপার ফ্লাওয়ার ডেকোরেশন শুধু আপনার ঘরের পাল্টাবে না সেই সাথে আপনাকে এক অনন্য শিল্পীর রূপেও তুলে ধরবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে পুরনো জিনিস ব্যবহার করে দারুণ পেপার ফ্লাওয়ার ডেকোরেশন করা যায়।

১/পুরনো ম্যাগাজিন বা বইয়ের পৃষ্ঠা

আপনার বাড়ির কোন এক কোনায় পড়ে থাকা পুরনো ম্যাগাজিন বা নষ্ট হয়ে যাওয়া বইয়ের রঙ্গিন পৃষ্ঠাগুলো দিয়ে বানিয়ে ফেলুন অসাধারণ পেপার ফ্লাওয়ার। এগুলো দিতে পারে একটি ভিজেন্ট লুক যা খুবই স্টাইলিস্ট।

২/পুরনো শপিং ব্যাগ বা গিফট পেপার

শপিং ব্যাগ বা গিফট প্যাকেটের রঙ্গিন কাগজগুলো অনেক সময় খুব আকর্ষণীয় হয়। সেগুলো দিয়েই বানিয়ে ফেলুন চকচকে ও বাহারি পেপার ফুল। দেয়াল উইন্ডো ফ্রেম কিবা গিফট বক্স সাজাতে এগুলো অসাধারণ কাজে দেয়।

৩/খালি বোতল বা যার দিয়ে ফুলদানি
জ্যাম, সস বা পানির খালি বোতলকে ফেলে না দিয়ে  রং বা পেপার মুড়িয়ে ফুলদানি তৈরি করুন। এরপর তার মধ্যে পেপার ফ্লাওয়ার বসিয়ে জ্বালানোর পাশে বা টেবিলের উপর রাখলে ঘরটা একদম বদলে যাবে।

৪/পুরনো কাপড় ও লেজ দিয়ে ফুলের ব্যাকগ্রাউন্ড

যেসব পুরনো কাপড় আর ব্যবহার হয় না তাদের টুকরো কেটে ফুলের পেছনে পাতার মত লাগিয়ে দিন। যোগ করে দিতে পারেন ফিনিশিং টাচ।

৫/পুরনো সিডি বা ডিক্স দিয়ে দেয়াল ফ্রেম

ফুলের মাঝে বা নিচে লাগিয়ে দিন একটি পুরনো সিডি। এটি আলু পড়লে চকচক করবে এবং ফ্রেম হিসেবে দারুন দেখাবে। এতে এক ধরনের মডার্ন আটিস্টিক লুক আসে 

৬/পুরনো গিফট বক্সের ঢাকনা বা সু বক্স ব্যবহার

পেপার ফুলগুলো ছোট ছোট ক্লাসটার করে গিফট বক্স বা সু বক্সের ঢাকনার উপর সাজিয়ে প্রেম বানাতে পারেন। এরপর সেটা দেয়ালে ঝুলিয়ে দিন স্মার্টও পরিবেশবান্ধব ডেকর।

৭/পুরনো জার্নাল বা ক্যালেন্ডারের পাতাও কাজে লাগানো

ক্যালেন্ডার এর কিছু পাতায় আকর্ষণীয় ছবি বা রং থাকে। সেই পাতাগুলো দিয়েও বানাতে পারেন ইউনিক ফুল যা দেয়ালের কোন নির্দিষ্ট অংশে আকর্ষণ তৈরি করবে।

পরামর্শঃ
  • অথবা ইলেকট্রিক আঠা ব্যবহার করার আগে কাগজের সঙ্গে ভালোভাবে টেস্ট করুন যেন দাগ না পরে।
  • ডেকোরেশন গুলো এমন ভাবে তৈরি করুন যাতে খুলে রাখা যায় ও পুণ্য ব্যবহার সম্ভব হয়।
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার এই কনসেপ্ট শেয়ার করলে অনেকে উৎসাহ পাবে আপনি হতে পারেন সৃজনশীলতা ও সচেতনতার মডেল।
এইভাবে পুরনো জিনিসপত্রকে নতুন ভাবে রূপ দিয়ে আপনি ঘর সাজানোর এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারেন যেখানে থাকবে মৃত্যু ব্যায়িতা পরিবেশ ভালোবাসা আর অগাধ কল্পনার ছোঁয়া।

ঘর সাজানোর সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী

ঘর সাজানো শুধু রং বা জিনিসপত্র বসানোর বিষয় না এটি একটি শিল্প। একটি ঘরের সাজ এমন হওয়া উচিত যা আপনার ব্যক্তিত্ব রুচি এবং আরাম কে তুলে ধরে। তবে ঘর সাজাতে গিয়ে যদি কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল না রাখা হয় তাহলে সেটি দেখতে বিশৃংখল অস্বস্তিকর বা খুবই সাধারণ মনে হতে পারে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো যা ঘর সাজানোর সময় অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত।

১/আলো ও বাতাসের চলাচল

ঘর সাজানোর আগে দেখুন ঘরে প্রাকৃতিক আলো এবং বাতাস ঠিকঠাক আসছে কিনা। খুব ভারী পর্দা বা বড় বড় আসবাব যেন জালানার রোধের পথ না আটকায়।

২/রংয়ের সমন্বয়

ঘরের দেয়াল, া পর্দা, কুশন, ওয়ার্ক পিস সবকিছুর মধ্যে রংয়ের একটা মিল থাকা জরুরী। অতিরিক্ত চটকদার রং এড়িয়ে হালকা প্রশান্তি ময় রঙ বেছে নিন বিশেষ করে ছোট ঘরের ক্ষেত্রে।

৩/ঘরের আকার অনুযায়ী সাজ

ছোট ঘরে বড় বড় সোফা বা বড় টেবিল রাখলে ঘরটা আরো ছোট ও বোঝাই মনে হয়। তাই ঘরের সাইজ অনুযায়ী আসবাব ও সাজসজ্জা বাছাই করুন।

৪/প্রয়োজনে ও নান্দনিকতায় ভারসাম্য

শুধু সুন্দর দেখে কিছু বসাবেন না দেখুন সেটা কতটা কার্যকরী। যেমনঃ শোপিস সুন্দর হলেও যদি বারবার পড়ে যায় বা জায়গা দখল করে তবে সেটি  পরিশলিত দেখাবে না।

৫/জায়গার ফাঁকা রাখা
ঘরের প্রতিটি কোন না ভরিয়ে কিছুটা খালি রাখুন যেন চোখ আর মন দুটোতেই প্রশান্তি আসে। খালি জায়গা মানে শূন্যতা নয় বরং একটি  "Breathing Space".

৬/ব্যক্তিগত স্পর্শ

আপনার নিজ হাতে কি তৈরি কিছু জিনিস পরিবার ভ্রমণের ছবি আপনার পছন্দের উক্তি এসব যোগ করলে ঘরটা আরো নিজের হয়ে ওঠে।

৭/পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা সহজ কি না

ঘর সাজানোর সময় খেয়াল রাখুন যাই বসাচ্ছেন তা যেন পরিষ্কার করা সহজ হয়। অতিরিক্ত জটিল ও ধুলাবালি ধারণক্ষম জিনিস এড়ানো ভালো।

৮/শিশুর নিরাপত্তা ( যদি থাকে)

ছোট শিশু থাকলে ধারালো বা কাচের জিনিস এড়িয়ে চলুন। নিচু টেবিল বা খোলা কর্নারের নিরাপত্তা বাম্পার ব্যবহার করতে পারেন।

৯/আলো ও ছায়ার খেলা

রাতের জন্য ঘরে আলোর ভিন্ন ভিন্ন স্তর রাখা ভালো যেমনঃ ছাদ বাতি, কর্নার ল্যাম্প, ফোকাস লাইট। এতে ঘর ভিন্ন ভিন্ন মোড তৈরি হয়।

১০/পরিবেশ বান্ধব উপাদান ব্যবহার

যতটা সম্ভব পূর্ণ ব্যবহারযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জিনিস ব্যবহার করুন যেমন পেপার ফ্লাওয়ার,  কটন কাপড়, বাস বা মাটির তৈরি পাত্র ইত্যাদি।

ঘর সাজানো মানে শুধু বাহ্যিক রূপ নয়, এটি একটি অনুভূতি। সেই অনুভূতিকে সুন্দর রাখতে হলে দরকার একটু পরিকল্পনা ভালোবাসা আর সচেতন দৃষ্টি।

ঘর সাজানোর সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী

ঘর সাজানো মানে শুধু আসবাব বা শোপিস বসানো নয় বরং আত্মপ্রকাশের মাধ্যম। এটি ভালোভাবে সাজানো ঘর কেবল চমৎকার দেখায় না বরং তা মনকে শান্তি দেয় কাজের মনোযোগ বাড়ায় এবং অতিথির চোখে আপনার রুচির পরিচয় তুলে ধরে। তবে ঘর সাজাতে গিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় না রাখলে তা দেখতে বিশৃংখল অগোছালো অসুস্থতার হয়ে উঠতে পারে। তাই ঘর সাজানোর সময় নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি।

১/আলো ও বাতাসের প্রাকৃতিক চলাচল নিশ্চিত করা

সাধারণর আগে নিশ্চিত করুন জালানার দিয়ে পর্যাপ্ত আলো বাতাস আসছে। ভারী পর্দা বা বড় আসবাব যেন আলু আটকে না রাখে।

২/রঙের সঠিক সমন্বয়

দেয়াল, া পর্দা, বালিস, কার্পেট সবকিছুর মধ্যে রঙের ভারসাম্য থাকলে ঘর বেশি পরিপাটি দেখায়। হালকা ও প্রশান্তিময় রঙ ছোট ঘরে ভালো মানায়।

৩/ঘরের মাপ অনুযায়ী আসবাব বাছাই

ঘর ছোট হলে হালকা ও ভাজ করা যায় এমন আসবাব বেছে নিন। বড় ঘরে সঠিক অনুপাতে ফার্নিচার না রাখলে ঘর ফাঁকা দেখাতে পারে।

৪/প্রয়োজন ও সৌন্দর্যের ভারসাম্য

সৌন্দর্য যে জিনিস বসানো হচ্ছে তা কেবলই সুন্দরী নয় ব্যবহারযোগ্য হওয়া উচিত।

৫/জিনিসের সংখ্যা সীমিত রাখা

ঘর সাজানোর সময় একসঙ্গে অনেক কিছু রাখলে বিশৃঙ্খলা দেখাতে পারে। কিছু জায়গা ফাঁকা রাখলে ঘর বড় ও শ্বাস-প্রশ্বাসের মত মনে হয়।

৬/পরিছন্নতা বজায় রাখা সহজ কি না তা দেখা

ঘরের প্রতিটি শোপিস আসবাব বা শয্যা এমন হওয়া উচিত যাতে পরিষ্কার করা সহজ হয় যেন ধুলাবালি জমে না থাকে।

৭/নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য

কাজ ধারালো বা নিচু বস্তু ব্যবহার করার সময় সাবধানে থাকতে হবে। শিশু থাকলে নিরাপত্তা কন্যার ব্যবহার করা জরুরী।

৮/ব্যক্তিত্ব ও নিজের পছন্দের প্রতিফলন রাখা

আপনার নিজের তৈরি কোন ্ আর্ট , প্রিয় রং , ভ্রমণের ছবি এসব কিছু যোগ করলে ঘর আপনার মতন হয়ে উঠবে।

৯/আলো ছায়ার সৌন্দর্য কাজে লাগানো

দিন ও রাতের জন্য আলোর স্তর তৈরি করুন। যেমন ছাদ বাতির সাথে একটি টেবিল ল্যাম্প বা এলইডি লাইট যোগ করুন।

১০/টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব উপাদান ব্যবহার

পুণ্য ব্যবহারযোগ্য বা পুরনো জিনিস থেকে তৈরি ডেকোরেশন যেমনঃ পেপার ফ্লাওয়ার, মাটির পাত্র ব্যবহার করুন পরিবেশ ও পকেট দুয়েরোই উপকার।

ঘর সাজানো মানে কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্য নয় বরং এক ধরনের মানসিক প্রশান্তি তৈরি করা। তাই নিজের জায়গাটিকে সাজান যত্ন আর ভালোবাসা দিয়ে যাতে সেখানে ফেরা প্রতিবার নতুন আনন্দ নিয়ে আসে।

শিশুদের রুম সাজানোর জন্য মজার ও নিরাপদ আইডিয়া


শিশুদের রুম সাজানো মানে শুধু রঙ্গিন করে তোলার নয় তাদের কল্পনার জগত নিরাপত্তা এবং শেখার পরিবেশ একসাথে তৈরি করে দেওয়া। একটি শিশুর ঘর যেন হয় মজার, উজ্জ্বল , সৃষ্টিশীল আর অবশ্যই নিরাপদ। নিচে কিছু অসাধারণ এবং কার্যকরী আইডিয়া শেয়ার করা হলো যা দিয়ে আপনি সহজেই শিশুদের রুম সাজাতে পারবেন মজারও নিরাপদ ভাবে।

পেপার-ফ্লাওয়ার-দিয়ে-রুম-ডেকোরেশন-আইডিয়া








১/রঙ্গিন থিমভিত্তিক দেয়াল সাজানো

শিশুর পছন্দ অনুযায়ী থিম বেছে নিতে পারেন যেমন কার্টুন চরিত্র, মহাকাশ, সমুদ্র , রংধনু বা জঙ্গল থিম। ওয়াল স্টিকার , পেইন্টিং বা ওয়ালপেপার ব্যবহার করে এই থিম তৈরি করা যায় সহজে।

২/সফট পেপার ফ্লাওয়ার বা ক্লাউড ডেকোরেশন

নরম কাগজ বা ফোন দিয়ে বানানো ফুল ক্লাউড বা তারা দিয়ে দেয়াল বা সিলিং সাজানো যেতে পারে এতে ঘর মজারও হবে আবার নিরাপদ থাকবে।

৩/নিরাপদ বাচ্চার উচ্চতায় ফার্নিচার

খাট, টেবিল , চেয়ার ইত্যাদি যেন শিশুদের উচ্চতায় হয়। ধারালো কোন নেই এমন গোলাকৃতি আসবাব বেছে নেওয়া ভালো।

৪/মেঝেতে সফট ম্যাপ বা কার্পেট

বাচ্চারা মেঝেতে বসে খেলতে ভালোবাসে তাই রঙ্গিন ও সবম্যাট ব্যবহার করুন যাতে পড়ে গেল আঘাত না লাগে। এন্টি স্লিপ ম্যাট আরো ভালো।

৫/খেলার জায়গা তৈরি

একটি ছোট খেলাঘর পাপেট শো স্টেশন বা ছোট বইয়ের কোনা তৈরি করুন যেখানে বাচ্চারা খেলেও এবং শিখতেও পারে।

৬/প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস নিশ্চিত করা

রুমে জালানা থাকলে তা যেন খোলামেলা থাকে এবং পর্দা হালকা রঙের হয়। এতে শিশুদের মানসিক বিকাশে সহায়তা হয়।

৭/দেয়ালে মেমোরি বোর্ড বা আর্ট গ্যালারি

শিশুর আঁকা ছবি পুরষ্কার ফটো বা পছন্দের স্টিকার দিয়ে ছোট একটা আর্ট করনা তৈরি করুন। এতে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

৮/খোলা জায়গা রাখা

রুম খুব বোঝাই না করে খোলা জায়গায় খালি রাখুন। ছোট টুলবা ভাজ যজ্ঞ আসবাব ব্যবহার করলে জায়গা বাঁচে।

৯/আলোর খেলাই মজা

রাতে কিছু ফেইরি লাইট বা শিশুর পছন্দমত প্রজেক্টর নাইট লাইট ব্যবহার করলে ঘরটা হয়ে ওঠে রূপকথার মত।

১০/নাম বা বর্ণ দিয়ে সাজানো

শিশুর নামের অক্ষর দিয়ে ডেকোরেশন বানান যেমন কাগজ বা কাঠের অক্ষর নামের বানান বা এলইডি লাইট লেটার সাইন এতে তারা নিজের রুমকে আরো আপন করে নেয়।

বোনাস টিপসঃ
  • ভাঙ্গার সম্ভাবনা থাকে এমন কাজ বা সিরামিক জিনিস এড়িয়ে চলুন।
  • এলার্জি হয় এমন ভুল ধরে এমন জিনিস ব্যবহার না করাই ভালো।
  • ঘরে টানা দড়ি ্ড বৈদ্যুতিক প্লাগ যেন শিশুদের নাগালের বাইরে থাকে।
এমন একটি শিশুর রুম কেবল ঘর নয় এটি তার শেখা খেলা ও বেড়ে ওঠার জায়গা। তাই সেখানে যেন থাকে ভালোবাসা নিরাপত্তা আর আনন্দের ছোঁয়া এই ছোট ছোট চিন্তা দিয়েই আপনি গড়ে তুলতে পারেন তাদের স্বপ্নের রাজ্য।





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দিয়া ক্র্যাফট হোম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়। নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url