পুরনো বোতল দিয়ে ঘর সাজানোর ৫টি সহজ আইডিয়া

পুরনো গ্লাস বোতলকে রূপান্তর কর একটি মনোমুগ্ধকর ঝাড়বাতিতে। এর জন্য লাগবে একটি স্বচ্ছ গ্লাস বোতল, একটি ছোট ফেয়ারি লাইট অবশ্যই ব্যাটারি চালিত ফেয়ারী লাইট এবং কিছু সাজানোর উপাদান যেমনঃ রঙ্গিন পাথর, শুকনো ফুল বা রঙ্গিন কাগজ। বোতলের মুখ দিয়ে ফেয়ারি লাইট ঢুকিয়ে নাও এবং ব্যাটারি অংশটি বোতলের বাইরে রেখে ঢাকনা দিয়ে কভার করে দাও। চাইলে বোতলের 

চারপাশে অ্যাক্রেলিক পেইন্ট দিয়ে ডিজাইন করে নিতে পারো। এই আলো তোমার বেডরুম বা বসার ঘরে টেবিল এর জন্য হতে পারে একদম পারফেক্ট। আমরা অনেক টাকা খরচ করে এগুলো কিনে থাকি কিন্তু একটু বুদ্ধি খাটিয়েই কিন্তু বাড়িতে বসেই অল্প খরচে হোম ডেকরের আইডিয়াগুলো খুব সহজেই বের করা যায় এবং ঘরকে খুব সুন্দর করে রঙ্গিন করা যায়।

পুরনো কাচের প্লাস্টিক বোতলকে পরিণত কর একটি ইউনিক ফুলদানিতে। বোতলটিকে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নাও। এরপর স্প্রে পেইন্ট দিয়ে ইচ্ছেমত রং করো অথবা রশি, ফেব্রিক বা জুট দিয়ে মুড়িয়ে নাও। চাইলে বাটিক প্রিন্ট বা ওয়াসি টেপ ব্যবহার করে আরো রঙ্গিন করে তুলতে পারো। এই ফুলদানিতে সত্যিকারের ফুল, শুকনো ফুল বা আর্টিফিশিয়াল ফ্লাওয়ার বসাতে পারো। এটি সোফার পাশে, টিভির পাশে কিংবা বেড সাইড টেবিলেও রাখতে পারো। অনেক সময় আমরা অনেক বোতল ফেলে দিই আমাদের সবার বাসায় কমবেশি কিন্তু বোতল থাকেই। তাই বোতলগুলো ফেলে না দিয়ে যদি সামান্য একটু খরচ করে বোতলের এই ফুলদানি বানানো যায় তাহলে ঘর দেখতে যেমন সুন্দর লাগবে তেমনি ইউনিক কিছু বানানো হয়ে হয়ে যাবে। চাইলে এই বোতলের ফুলদানি বানানো বা বানিয়ে বিক্রি করেও ইনকাম করা যাবে।

যাদের বাসা ফ্লাটে এবং বারান্দা ছোট, তাদের জন্য একটি অসাধারণ আইডিয়া। ছোট বা মাঝারি আকারের প্লাস্টিক বোতলের মাঝখান কেটে তার ভিতর মাটি ও ছোট গাছ বসিয়ে দাও। এরপর বোতলের দুই প্রান্তে ছিদ্র করে দড়ি বা লাইলন সুতা বেঁধে বেলকনিতে বা জ্বালানোর পাশে ঝুলিয়ে রাখো। চাইলে বোতলগুলো রং করে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে পারো। বিশেষ করে মানিপ্ল্যান, মিন্ত, তুলসি বা ক্যাকটাস জাতীয় গাছ অথবা ঘাসফুল এই বোতলে ভালো হয়। এটি শুধু ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায় না একই সাথে একটি টাচ অফ ন্যাচারও দেয়। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে ঝুলন্ত বোতল গার্ডেনে ঘাসফুল যেটি সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে কারণ বোতল কেটে যখন মাঝে ঘাসফুলের গাছগুলো লাগিয়ে দেওয়া হয় ফুলগুলো বাহির দিয়ে ফুটে বের হয়ে আসে যা দেখতে অনেক আকর্ষণীয় লাগে।

প্লাস্টিক বোতলগুলোকে ব্যবহার কর রান্নাঘরের জন্য। এক থেকে দুই লিটারের বোতলগুলো মাঝখান থেকে কেটে নিয়ে সেই অংশগুলো ব্যবহার কর ডাল, মসলা বা শুকনো খাদ্য সংরক্ষণের জন্য। চাইলে বোতলের মুখ অংশটিকে ব্যবহার করতে পারো ছোট পাত্র বানিয়ে। বোতলের গায়ে সুন্দর স্টিকার লাগিয়ে দাও যাতে বোঝা যায় ভেতরে কি আছে। চাইলে একটি ট্রে বা কাঠের ফ্রেমে সাজিয়ে রাখলে সেটি দেখতে একদম প্রফেশনাল কিচেন অর্গানাইজার এর মত লাগবে। আমাদের মেয়েদের বিশেষ করে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে কিচেন সবাই চায় সুন্দর করে কিচেন পরিষ্কার রাখতে এবং সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে শুধু যে বোতল দিয়েই সব অর্গানাইজ করা যায় তা নয় একটু বুদ্ধি খাটিয়ে নিলে সুন্দর সুন্দর কিচেন অর্গানাইজার আইডিয়া বের হয় যা কিচেন কে করে আকর্ষণীয় ও সৌন্দর্যময়।

যারা একটু সৃজনশীল কাজ পছন্দ করে তারা বোতল পেইন্টিং ট্রাই করে দেখতে পারো। বোতলটিকে এক্রেলিক রং বা গ্লাস পেইন্ট দিয়ে রঙিন করে তোলো চাইলে গিটার ছোট পুঁথি কিংবা সেল লাগিয়ে দিতে পারো তাছাড়া অনেকেই পাটের দড়ি গুলো দিয়ে পেচিয়ে বোতলে প্রিন্ট করে এটাও বেশ চমৎকার। বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসবের সময়ে বা জন্মদিনে এই বোতলের মধ্যে এলইডি লাইট বসিয়ে দিলে পুরো 

ঘর এবং উৎসবমুখর পরিবেশ স্নিগ্ধ আলোয় ভরে ওঠে। এটি সেলফ, বুককেস বা ডাইনিং টেবিলেও রাখা যায়। তাছাড়াও বিভিন্ন রঙের বেরঙের বোতল রং করে প্লে দিয়েও ফুল বানানো যায় যা দেখতে আরো আকর্ষণীয় লাগে। বিভিন্ন মেলা বা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমে যেমন আরঙ্গে এই শোপিসগুলো অনেক হাই রেঞ্জ প্রাইজে বিক্রি করে থাকে বাড়িতেই যদি বোতল দিয়েই এত সুন্দর ডিজাইন করে শোপিস করা যায় তাহলে কোন কথাই নেই ঘরকে তাহলে করা যাবে একদম আকর্ষণীয় মনের মতন সুন্দর।

পুরনো বোতল দিয়ে ঘর সাজানো মানে শুধুমাত্র রিসাইক্লিং নয়। বরং তা একটি সৃজনশীলতা ও নিজের হাতে কিছু তৈরি করার আনন্দের প্রকাশ। উপরোক্ত আইডিয়াগুলো সহজ হলেও এগুলোর মাধ্যমে তুমি তোমার ঘরকে দিতে পারো একদম পারফেক্ট লুক বা নতুন লুক। মনে রেখো, সৃজনশীলতার কোন সীমা নেই। বোতলগুলো কিভাবে সাজাবে সেটি একান্তই তোমার কল্পনার বিষয়। তুমি চাইলে এই আইডিয়াগুলো ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার  করতে পারো এবং অন্যদেরও রিসাইক্লিং এর প্রতি আগ্রহী করে তুলতে পারো। আর হ্যাঁ, তোমার যদি অন্য কোন পুরনো জিনিস দিয়ে ঘর সাজানোর মজার আইডিয়া থাকে তবে কমেন্টে জানাতে ভুলো না ধন্যবাদ।